শক্তি চট্টোপাধ্যায় জীবনী ও তার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ এর নাম
শক্তি চট্টোপাধ্যায় ( ১৯৩৩–১৯৯৫ ) : জীবনানন্দ পরবর্তীকালে অন্যতম উল্লেখযােগ্য কবি । জন্মস্থান বহড়ু – দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা । কলকাতার কাশিমবাজার স্কুল থেকে পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন । পরে কবি বুদ্ধদেব বসুর আমন্ত্রণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যগঠিত তুলনামূলক সাহিত্যে ভরতি হলেও কয়েকমাস পড়ে তা ছেড়ে দেন । তঙ্কালীন ক্ল্যারিয়নবিজ্ঞাপন কোম্পানিতে কপিরাইটার হিসেবের প্রথম চাকরি । এরপর ‘ ভারবি’প্রকাশনায় , যেখানে তারই পরিকল্পনায় শ্রেষ্ঠ কবিতা ’ – র সিরিজ প্রকাশিত হতে থাকে ।
এই সময়ে বন্ধু পৃথ্বিশ গঙ্গোপাধ্যায়ের সহযােগিতায় একটি টিউটোরিয়াল হােমও খােলেন । সে সময়ের তরুণ কবিদের একমাত্র মুখপত্র ‘ কৃত্তিবাস ’ পত্রিকায় তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান প্রতিভা । ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দেবুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘ কবিতা’পত্রিকায় ‘ যম’কবিতা লিখে তিনি সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেন । ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে তার প্রথম উপন্যাস ‘ কুয়ােতলা’প্রকাশিত হয় যাতে তিনি তার স্বগ্রামের উপভাষা ব্যবহার করেছিলেন ।
এর আগে তার ছােটোগল্প ‘ নিরুপমের দুঃখপ্রকাশিত হয়েছে । তার অপর দুই উপন্যাস ‘ দাঁড়াবার জায়গা’ও ‘ অবনী বাড়ি আছাে ? ’ একসময়ে ‘ রূপচঁাদ পক্ষী’ছদ্মনামে কলকাতা নিয়ে নিয়মিত ফিচার লিখেছেন । পরবর্তীকালে সম্পাদনা করেছেন ‘ কবিতা সাপ্তাহিকী । তাঁর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫১ । প্রণীত – অনূদিত – সম্পাদিত কবিতা ও গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা ১১১। তাছাড়া অজস্র অগ্রন্থিত রচনা নানান পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে রয়েছে । অনুবাদ করেছেন ‘ মেঘদূত ’ , ওমর খৈয়াম , গালিব , লােরকা , রিলকে প্রমুখের কবিতা।‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাবাে’কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছিলেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার , ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে । এছাড়াও তিনি আনন্দ পুরস্কার , সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গঙ্গাধর মেহের পুরস্কার , মরণােত্তর রবীন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত হন ।
তাঁর অন্যান্য উল্লেখযােগ্য কাব্যগ্রন্থ : ‘ সােনার মাছি খুন করেছি ’ , ‘ হেমন্তের অরণ্যে আমি পােস্টম্যান ’ , ‘ ধর্মেও আছাে জিরাফেও আছাে ’ , ‘ ছিন্নবিচ্ছিন্ন ’ , ‘ প্রভু নষ্ট হয়ে যাই ’ , ‘ পাড়ের কথা মাটির বাড়ি ’ প্রভৃতি । বিশ্বভারতীতে অতিথি – অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনায় রত থাকাকালীন তিনি আকস্মিকভাবে প্রয়াত হন ।