শম্ভু মিত্র জীবনী ( ১৯১৫-১৯৯৭ ) : জন্ম কলকাতার ডােভার রােডে । বাবা শরৎকুমার মিত্র , মা শতদলবাসিনী দেবী । বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে পড়াশােনা । প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভরতি হন । অভিনয়ের পাঠ নেন কৃয়গােবিন্দ সরকারের কাছে । পেশাদার মঞ্চ রঙমহলে অভিনয় করেছেন মাটির ঘর ’ , ‘ ঘূর্নি ‘ , ‘ রত্নদীপনাটকে । ১৯৪১ – এ যােগ দেন মিনার্ভা থিয়েটারে।নাট্যাচার্যশিশিরকুমার ভাদুড়িরশ্রীরঙ্গম মঞ্চে ‘ জীবনরঙ্গ , ‘ উড়াে চিঠি ’ – সহ পাঁচটি নাটকে অভিনয় করেন ।
১৯৪২ – এর আগস্ট আন্দোলনের সময় রচনা করেন ‘ উলুখাগড়া ’ নাটক । ফ্যাসিস্ত – বিরােধী লেখক – শিল্পী সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন । নবগঠিত ভারতীয় গণনাট্য সংঘের বাংলা শাখার নাট্য সম্পাদক নির্বাচিত হন । ১৯৪৪ – এর ৩ জানুয়ারি স্টার থিয়েটারে বিজন ভট্টাচার্যের “ জবানবন্দী’নাটকের পরিচালনা । শ্রীরঙ্গম মঞে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের ‘ নবান্ন ’ প্রথম অভিনীত হয় । পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন , অভিনয়ও করেন । খাজা আহমেদ আব্বাসের ‘ ধরতি কে লাল ’ – এর সহকারী পরিচালক । অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্রের সঙ্গে বিয়ে । ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় ১৯৪৭ – এ ।
১৯৫০ – এর ১ লা মে , বহুরূপীনাট্যদলের প্রতিষ্ঠা । নাট্যপরিচালক পদেশম্ভু মিত্র । বহুরূপী প্রযােজিত প্রথম নাটক ‘ উলুখাগড়া ’ । দ্বিতীয় নাটক ‘ বিভাব’জাপানি কাবুকি নাটকের অভিনব রূপান্তর । রচনা ও পরিচালনা শম্ভু মিত্র । এরপর বহুরূপীর প্রযােজনায় একে একে মঞ্চস্থ হতে থাকে অবিস্মরণীয় নাটক , যা বাংলা নাটকচর্চাকে ঐতিহাসিক উচ্চতায় নিয়ে যায় । চার অধ্যায় , দশচক্র , যেমন , রক্তকরবী , ডাকঘর , পুতুল । খেলা , মুক্তধারা , বিসর্জন , রাজা অয়দিপাউস , রাজা , বাকি ইতিহাস , বর্বর বাঁশী ইত্যাদি । নাটক লেখা বা রূপান্তর , অভিনয় বা নিদের্শনা — কোনাে – না – কোনােভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন শম্ভু মিত্র ।
বাংলা নাট্যম প্রতিষ্ঠা সমিতির তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান প্রবক্তা । নাটক নিয়ে এই নিচ্ছিদ্র ব্যস্ততার মধ্যেই তিনি বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন , সহকারীর দায়িত্ব পালন করেছেন । স্বনামে ও ছদ্মনামে লিখেছেন প্রবন্ধ , গল্প । সম্মানিত হয়েছেন সংগীত – নাটক আকাদেমি , ম্যাগসাইসাই , কালিদাস ইত্যাদি পুরস্কারে ।