আধার কার্ড বাতিল : বর্তমানে আধার কার্ড বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ শোরগোল পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলায়। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। দুই বর্ধমান, বীরভূম ও নদীয়া জেলা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আধার কার্ড বাতিলের খবর শোনা গেছে। আর তাই নিয়েই যত বিভ্রান্তি। আমজনতার জন্য তো এটা একটা বিরাট বিপদ। অনেকেই তো আবার বড়োসড়ো আন্দোলনের মুখে নামারও হুমকি দিয়েছেন। তবে যদি সত্যিই আধার কার্ড বাতিল হয় তাহলে যেই যেই সমস্যাই পড়তে পারেন আপনি দেখে নিন –
বর্তমানে আধার কার্ড ছাড়া মানুষের কাজ চলে না। ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গেলে আধার কার্ড আবার রেশনের সুবিধা পাওয়ার জন্যও দরকার হয় আধার কার্ডের। এককথায় সব জায়গায় দরকার হয় আধার কার্ড। আরও যেই সমস্ত সমস্যা হতে পারে দেখুন।
আধার কার্ড বাতিল করা হলে কোন কোন সমস্যায় পড়তে হবে?
আধার কার্ড বাতিল জনিত কিছু সমস্যা : আধার বাতিল হলে আপনি যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন তার মধ্যে অন্যতম সমস্যাগুলো আলোচনা করা হলো।
পরিচয় পত্রের সমস্যা
আধার কার্ড না থাকলে ভোটার আইডি কার্ড, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট , প্যান কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মতো ডকুমেন্টস অকেজো হয়ে পড়তে পারে। আবার আধার কার্ড না থাকলে এই ডকুমেন্টস গুলি নতুন করে তৈরি করা যাবে না।
আধার কার্ড বাতিল করা হলে আপনার ব্যাংক পরিষেবা ব্যবহার করতেও অসুবিধায় পড়তে হতে পারে। কারণ আধার কার্ড এর মাধ্যমেই সমস্ত কিছু কাজ কর্ম করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ বাতিল হতে পারে আধার কার্ড। তারাতারি আপডেট করে নিন আপনার আধার কার্ডটি।
রেশনের সমস্যা
আধার কার্ড না থাকলে আপনি রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ বর্তমানে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক করা বাধ্যতামূলক। বায়োমেট্রিক যাচাই করে তবেই রেশনের মালপত্র দেওয়া হয়ে থাকে। তাই এটিও একটি অন্যতম সমস্যা।
সরকারি প্রকল্পের সমস্যা
আধার কার্ড বাতিল করা হলে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকেও বাদ পড়তে পারেন আপনি। যেমন – লক্ষীর ভান্ডার, 100 দিনের কাজ, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, কন্যাশ্রী , পিএম কিষান, যুবশ্রী প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার জন্য আধার কার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস।
স্কুল, কলেজের সমস্যা
স্কুল, কলেজ পড়ুয়ারাও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। কারণ স্কুল, কলেজে ভর্তির জন্য দরকার হয় আধার কার্ডের। এছাড়াও বিভিন্ন স্কলারশিপে আবেদন করা জন্য দরকার হয় আধার কার্ড। তাই আধার কার্ড বাতিল করা হলে এটিও একটি অন্যতম সমস্যা।
KYC এর সমস্যা
এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় KYC করার জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক। তাই আধার কার্ড বাতিল হলে নষ্ট হয়ে যাবে কেওয়াসি। সেক্ষেত্রে নতুন করে কেওয়াইসি করা অনেক জটিল হয়ে পড়বে। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে মৃত দেহ সৎকারের জন্যও প্রয়োজন হয় আধার কার্ডের।
বিমান বা ট্রেনের টিকিট বুকিং এর সমস্যা
বর্তমানে ট্রেনের টিকিট বা প্লেনের টিকিট বুকিং করতে হলেও দরকার হয় আধার কার্ডের।এইক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন প্রয়োজনে এখান সেখানে যাতায়াত করে থাকেন তাদের অগ্ৰিম টিকিট বুকিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।
সিমকার্ডের সমস্যা
সিমকার্ড কেনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি হল আধার কার্ড। তাই আধার বাতিল করা হলে সিমকার্ড কেনার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হতে পারে।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সমস্যায় পড়তে পারেন সাধারণ মানুষ। তারই মধ্যে কিছু সমস্যার কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ভুল ত্রুটি হলে তা মার্জনীয় এবং ইচ্ছাকৃত নয়।
আধার কার্ড বাতিল হলে কি করতে হবে?
নিকটবর্তী কোনো আধার এনরোলমেন্ট সেন্টারে গিয়ে নাম-পরিচয় সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জমা করতে হবে। একটি আধার আপডেট ফর্ম নিয়ে নিজের বায়োমেট্রিক পুণরায় চিহ্নিত করতে হবে। এরপর সেটি পুনরায় ভেরিফাই করতে হবে।
তবে আপনার যদি আধার কার্ড সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি UIDAI এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানাতে পারেন। বা টোল ফ্রি নম্বরে কল করে সমস্যার কথা জানাতে পারেন।
UIDAI ওয়েবসাইট – এখানে ক্লিক করুন।
টোল ফ্রি নম্বর – 1947