বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ প্রশ্ন উত্তর ( মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায়)। দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর 

Published On:

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ প্রশ্ন উত্তর: আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি দশম শ্রেণি ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ প্রশ্ন উত্তর, মাধ্যমিক ভূগোল বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ প্রশ্ন উত্তর, Class 10 Geography 1st chapter question in bengali,মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর, বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ প্রশ্ন উত্তর PDF যা আগত মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। (WBBSE) পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমিক সিলেবাসের অন্তর্গত ভূগোল বিষয়ের মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ সম্পূর্ণ অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করছি। Class X geography first chapter question in bengali

তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে দশম শ্রেণি ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class 10 Geography 1st chapter Question Pdf, মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF ডাউনলোড করো নাও এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে  থাকো। ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করো।

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ। মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | দশম শ্রেণি ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

‘বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ’ অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ MCQ প্রশ্ন

বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো: (প্রশ্নমান -1)

1. পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত হল-

  • a. ভেনেজুয়েলার অ্যাজেন
  • b. আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নায়াগ্রা
  • c. ভারতের যোগ জলপ্রপাত
  • d. আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া

Answer: a. ভেনেজুয়েলার অ্যামেল

2. পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী

  • a. মিসিসিপি মিসৌরি
  • b. নীলনদ
  • c. ইয়াংসিকিয়াং
  • d. গঙ্গা

Answer: b. নীলনদ

3. ইংরেজি ‘”‘ আকৃতির নদী উপত্যকাকে বলে-

  • a. গিরিখাত
  • b. ক্যানিয়ন
  • c. পিরামিড চুড়া
  • d. হিমদ্রোণি

Answer: b. ক্যানিয়ন

 4. পলিশঙ্কু গঠিত হয় নদীর-

  • a. পার্বত্য গতিতে
  • b. বদ্বীপ গতিতে
  • c. উচ্চ ও মধ্য গতির সংযোগস্থলে
  • d. হিমবাহের উপত্যকা প্রবাহে

Answer: c. উচ্চ ও মধ্য গতির সংযোগস্থলে

5. শুষ্ক অঞ্চলে কোমল শিলার ওপর গঠিত নদী উপত্যকা যে নামে পরিচিত

  • a. গিরিখাত
  • b. ক্যানিয়ন
  • c. ‘U’-আকৃতির উপত্যকা
  • d. ক্রেভাস

a Answer: b. ক্যানিয়ন

6. পার্বত্য প্রবাহে নদীর দুই পাশে যেসব সমান বা অসমান ধাপের মতে অল্প বিস্তৃত ভূভাগের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে

  • a. নদীসঙ্গ
  • b. স্বাভাবিক বাঁধ
  • c. খরস্রোত
  • d. কর্তিত পার

Answer: a. নদীমঙ্গ

7 . অতিগভীর V আকৃতির উপত্যকাকে বলে-

a. গিরিখাত b. ক্যানিয়ন c. কর্তিত স্পার d. স্নাজ পুল

Answer: a. গিরিখাত

৪. মন্দ্বকূপ সৃষ্টি হয় যার ক্ষয়কার্যের ফলে

a. নদীর b. বায়ুর b. হিমবাহের c. সমুদ্রতরঙ্গের

Answer: a. নদীর

9. পলল শম্ভু দেখা যায়

a. পর্বতের উচ্চভাগে b. পর্বতের পাদদেশে c. বদ্বীপ অঞ্চলে d. নদীর মধ্যপ্রবাহে

Answer: b. পর্বতের পাদদেশে

10. পৃথিবীর বৃহত্তম জলপ্রপাত

(a) যোগ (b) নায়াগ্রা (c) স্ট্যানলি বা বোয়ামা (d) শিবসমুদ্রম

Answer: (c) স্ট্যানলি বা বোয়ামা

11. পৃথিবীর প্রশস্ততম জলপ্রপাত হল মেকং নদীর

(a) বোয়ামা (b) নায়াগ্রা (c) খোন (d) ডিক্টোরিয়া

Answer: (c) খোন

12. কোন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে মন্ডকূপ সৃষ্টি হয়?

(a) নদী (b) বায়ু (c) হিমবাহ (d) সমুদ্রতরঙ্গ

Answer: (a) নদী

13. ভারতের বৃহত্তম নদীমধ্যস্ব দ্বীপ বা চর

( a) পূর্বাশা দ্বীপ (b) পান দ্বীপ (c) মাজুলি দ্বীপ (d) কামচাটকা দ্বীপ

Answer: (c) মাজুলি দ্বীপ

14. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী দ্বীপ হল

(a) মাজুলি (৮) নয়াচর (c) ইলহা-দ্য-মারাজো (d) কোনোটিই নয়

Answer: (c) ইলহা-দ্য-মারাজো 

15. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী দ্বীপ অবস্থিত

(a) আমাজন নদীতে (b) গঙ্গানদীতে (c) ব্রহ্মপুত্র নদে (d) সিন্ধু নদে

Answer: (a) আমাজন নদীতে

16. পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ হল

(a) মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ (b) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর মিলিত বদ্বীপ (c) কাবেরী নদীর বদ্বীপ (d) হোয়াংহো নদীর বদ্বীপ

Answer: (b) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর মিলিত বদ্বীপ

17. পৃথিবীর বৃহত্তম সুপেয় জলের ভাণ্ডার হল 

(a) নদী (b) সমুদ্র (c) হিমবাহ (d) হ্রদ

Answer: (c) হিমবাহ

18. পৃথিবীর ধীরতম হিমবাহ

(a) অ্যান্টার্কটিকার মেসার্ভ (b) আলাস্কার হুভার্ড (c) অ্যান্টার্কটিকার ল্যামবাট (d) আলাস্কার মাল্যসদিনা

Answer: (a) অ্যান্টার্কটিকার মেসার্ভ

19. হিমশৈলের কত ভাগ সমুদ্রজলের উপরে থাকে?

(a) 1/4 ভাগ (b) 1/7 ভাগ (c) 7/10 ভাগ (d) 1/9 ভাগ

Answer: (d) 1/9 ভাগ

20. ম্যাটারহর্ন শৃঙ্গ একটি

(a) অ্যারেট (b) হিমদ্রোণি (c) ক্র্যাগ (d) পিরামিড চূড়া

Answer: (d) পিরামিড চূড়া

21. বড়ো হাতলওয়ালা ডেক চেয়ারের মতো ভূমিরূপকে ফরাসি ভাষায়

(a) ড্রামলিন (b) সার্ক (c) কার (d) হর্ন

Answer: (b) সার্ক

22. সাটল্যান্ডের এডিনবরা ক্যাসল একটি

(a) ক্র্যাগ (b) রসেমতানে (c) টিলা (d) হোয়েলব্যাক

Answer: (a) ক্র্যাগ

23. ঢাল পর্বতগাত্র ও হিমবাহের মধ্যে যে ফাঁক দেখা যায়, তাকে বলে

(a) ক্রেভাস (b) সিরাক (c) বার্গফ্রন্ড (d) করি

Answer: (c) বার্গফ্রন্ড

24. বায়ুর অবনমন ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট গর্তকে বলে

(a) ওয়াদি (b) রান (c) ধান্দ (d) মরীচিকা

Answer: (c) ধান্দ

25. অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়িকে বলে (a) সিফ (b) হামাদা (c) বাখান (d) রান

Answer: (c) বাখান

26. শিলাময় মরুভুমিকে বলে

(a) ধান্দ (b) রেগ (c) হামাদা (d) ওয়াদি

Answer: (c) হামাদা

27. পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি

(a) সাহারা (b) আটাকামা (c) খর (d) গোবি

Answer: (a) সাহারা

28. চলমান বালিয়াড়িকে খর মরুভূমিতে বলে

(a) মেসা (b) খ্রিয়ান (c) লোয়েস (d) বিউট

Answer: (b) থ্রিয়ান

29. পৃথিবীর বৃহত্তম লোয়েস সমভূমি অবস্থিত

a) ইয়াংসিকিয়াং অববাহিকায় (৮) টাইগ্রিস অববাহিকায় (c) সিকিয়াং অববাহিকায় (d) হোয়াংহো অববাহিকায়

Answer: (d) হোয়াংহো অববাহিকায়

30. মিশরের কাতারা পৃথিবীর বৃহত্তম

(a) জিউগেন (b) ইনসেলবার্জ (c) গৌর (d) মরুখাত

Answer: (d) মরুখাত

31. মরু অঞ্চলে অবশিষ্ট পাহাড়গুলিকে বলে

(a) গৌর (b) ইনসেলবার্জ (c) ইয়ারদাত (d) মোনাডনক

Answer: (b) ইনসেলবার্জ

32 প্লায়াকে রাজস্থানের থর মরুভূমিতে বলে

(a) বোলসন (b) শটস (c) ধান্দ (d) বাজাদা

Answer: (c) ধান্দ

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ (অধ্যায় – ১ )

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান -1)

A. শূন্যস্থান পূরণ করো :

1. দুই নদী অববাহিকাকে যে_________পৃথক করে তাকে বলে জলবিভাজিকা।

Answer : উচ্চভূমি|

2. নদীপ্রবাহ পরিমাপের একক হল

Answer : কিউসেক|

3. পার্বত্য অঞ্চলে নদীর গতিপথে আড়াআড়িভাবে চ্যুতি থাকলে সৃষ্টি হয়

Answer : জলপ্রপাত

4. পার্বত্যপ্রবাহে নদীর গতিপথে সৃষ্টি হয়_

Answer : গিরিখাত

5. পার্বত্য অংশে নদী যেটুকু অংশ অধিকার করে আছে তাকে বলে

Answer : পার্বত্য প্রবাহ

6. পার্বত্য অংশে নদীর নিম্নক্ষয় প্রধানত _______প্রক্রিয়ায় ঘটে।

Answer : অবঘর্ষ

7. ভারতের________অঞ্চলে গিরিখাত দেখা যায়।

Answer : লাদাখ

৪. জলপ্রপাতের ঢাল বেশি হলে তাকে_______বলে ।

Answer : ক্যাটারাক্ট

9. পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী

Answer : নীল

10. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী,

Answer : আমাজন

11._________নদী পৃথিবীর সর্বাধিক জল বহন করে।

Answer : আমাজন

12. নিউমুর, ঘোড়ামারা দ্বীপগুলির নিমজ্জনের প্রধান কারণ

Answer : সমুদ্র জলতলের উত্থান

13. পুনর্যৌবন লাভের ফলে নিকবিন্দুতে সৃষ্ট একটি জলপ্রপাত হল_

Answer : দশম

14. উত্তরাখণ্ড রাজ্যে বদ্রীনাথের নিকট ঋষিগঙ্গা উপত্যকা একটি__________এর উদাহরণ।

Answer : ঝুলন্ত উপত্যকার

15. রাজস্থানের থর মরুভূমির_______হ্রদ একটি প্লায়া হ্রদ।

Answer : সম্বর

16. মরুভূমির শুষ্ক নদীখাতকে_________বলে।

Answer : ওয়াদি

B. সত্যমিথ্যা নিরুপণ করো :-

1. পার্বত্য অঞ্চলে নদীর প্রধান কাজ ক্ষয়। (T)

2. হিমরেখার ওপর নদীর কাজ শুরু হয়। [F]

3. মিসিসিপি নদীর বদ্বীপ অনেকটা পাখির পায়ের মতো দেখতে। [T]

4. সরস্বতী নদীতে গঠিত গারসোপ্পা ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত। [F]

5. চিনের হোয়াংহো অববাহিকায়, ফ্রান্সের রাইন অববাহিকায়, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি-মিসৌরি অববাহিকায় লোয়েস সমভূমি দেখা যায়। [T]

6. নদীর উচ্চগতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিরূপ হল মন্থকূপ। [T]

7. অবঘর্ষ এবং ঘর্ষণে নদীখাতে গর্তের সৃষ্টি হয়। [T]

৪. সমুদ্রতল হল ক্ষয়ের শেষ সীমা। [T]

9. গোদাবরীকে ভারতের আদর্শ নদী বলা হয়। [F]

10. কলোরাডো নদীতে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখা যায়। [T]

11. গিরিখাত এবং ক্যানিয়নে নিম্নক্ষয়ের তুলনায় পার্শ্বক্ষয় বেশি হয়। [F]

12. নিম্নগতিতে নদীর দুই পাশে স্বাভাবিক বাঁধ তৈরি হয়। [T]

13. পৃথিবীতে গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি মরুভূমির প্রসারণের কোনো কারণই নয়। [F]

14. Great Green wall হল সাহারা মরুভূমির দক্ষিণপ্রান্তে 7,000km দীর্ঘ ও 15km প্রশস্ত একটি গাছের প্রাচীর।

[T]

15. মধ্যগতিতে জলস্রোতের বেগ কমে যাওয়ায় মিয়েন্ডারের সৃষ্টি হয়। [T]

বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

1. নদীর উৎস অঞ্চলের অববাহিকাকে কী বলে?

Answer : ধারণ অববাহিকা

2. হালকা ও অতিসূক্ষ্ম তুষারকণাকে কী বলে?

Answer : নেভে

3. নেভে জমাটবদ্ধ হয়ে বরফের মাঝামাঝি অবস্থার সৃষ্টি হলে তাকে কী বলে ?

Answer: ফির্ন|

4. বদ্বীপের ‘ডেল্টা’ নামকরণ কে করেন?

Answer : হেরোডেটাস

5. পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী খাঁড়ি কোনটি?

Answer : ওব নদীর খাঁড়ি

6. ভারতের বৃহত্তম নদী অববাহিকা কোনটি ?

Answer : গঙ্গা নদীর অববাহিকা

7. শুষ্ক অঞ্চলের গিরিখাতকে কী বলে?

Answer : ক্যানিয়ন

৪. পিরামিড চূড়া সুইস আল্পসে কী নামে পরিচিত?

Answer : হর্ন

9. ভাব কী?

Answer : কেটল হ্রদের তলদেশে স্তরে স্তরে সঞ্চিত পলিকে ভার্ব বলে।

10. কোন দেশকে ‘ফিয়র্ডের দেশ’ বলে?

Answer : নরওয়েকে

11. আউটওয়াশ প্লেনে সৃষ্ট গর্তগুলিকে কী বলে?

Answer : কেটল

12. প্রথম কে, কত খ্রিস্টাব্দে ‘ইনসেলবার্জ নামকরণ করেন?

Answer : ভূতত্ববিদ পাসার্জ, 1904 খ্রিস্টাব্দে

13. বায়ুর অপসারণের ফলে সৃষ্ট গর্তকে খর মঙ্গোলিয়ায় কী বলে?

Answer : প্যাং কিয়াং হলো

14. গউড বা গাসি কী?

Answer : সিফ বালিয়াড়ির মধ্যে যে করিডর থাকে তাকে সাহারায় গউড বলে।

15. বোর্নহার্ডট কী?

Answer : ইনসেলবার্জ আরও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গোলাকার মাথাবিশিষ্ট ঢিবিতি পরিণত হলে তাকে বলে বোর্নহার্ডট।

দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় 2 নং প্রশ্ন উত্তর / মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় 2 নং প্রশ্ন উত্তর

বিভাগ – গ:- সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন: (প্রশ্নমান-2)

1. নদীর ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র কী? 

Ans:- নদী উপত্যকার ঢালের সঙ্গে নদীর গতিবেগের এবং নদীর গতিবেগের সঙ্গে নদীর বহনক্ষমতার সম্পর্ক বর্তমান।

কোনো নদীর একটি নির্দিষ্ট গতিবেগের,যে পরিমাণ বহনক্ষমতা থাকে,কোনো কারণে সেই নদীর জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে বা ঢালের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলে তার বহন করার ক্ষমতা 2*6=64গুণ বৃদ্ধি পায়।অর্থাৎ ঘন্টায় 2কিমি গতিবেগ প্রবাহিত কোনো নদীর যে পরিমাণ বোঝা টানতে পারে,সেই নদী দ্বিগুণ বেগে বা ঘন্টায় 4 কিমি বেগে প্রবাহিত হলে, সমপরিমাণ জল 64গুণ বেশী পরিমাণ বোঝা টানতে পারে।নদীর গতিবেগের সঙ্গে নদীর বহন ক্ষমতার এই অনুপাতকে নদীর “ষষ্ঠঘাতের সূত্র”(Sixth Power Law) বলে।

2. করি বা সার্ক কাকে বলে?

Ans:- উঁচু পাবর্ত্য অঞ্চলে হিমবাহ প্রবাহ পথে উৎপাটন ও অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় পাহাড়ের খাঁজে অর্ধগোলাকৃতি গহ্বর বা হাতলযুক্ত ডেক চেয়ার বা অ্যাম্পিথিয়েটারের মতো ভূমিরূপ সৃষ্টি করে। এই ধরনের ভূমিরূপকে ইংল্যান্ডে করি এবং ফ্রান্সে সার্ক বলে

3. বহির্জাত ভূমিরূপ প্রক্রিয়া কাকে বলে?

Ans:- যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নদী , বায়ু হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি ভূপৃষ্ঠে রূপের ক্রিয়াশীল হয়ে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় তাকে বহির্জাত প্রক্রিয়া বলা হয় । এই প্রক্রিয়াকে বহিঃস্থ প্রক্রিয়াও বলা যায়‌।

4. নদী উপত্যকা কাকে বলে?

Ans:- নদীর এক তীর থেকে অপর তীর পর্যন্ত একটি রেখার দ্বারা যুক্ত করলে যে পার্শ্বচিত্র গড়ে ওঠে, তাকে নদী উপত্যকা বলে, (অথবা) আর সেই সংকীর্ণ নিম্নভূমির মধ্যে দিয়ে যখন নদী প্রবাহিত হয়, তখন তাকে বলে নদী-উপত্যকা বলে।

5. জলবিভাজিকা কাকে বলে?

Ans:- পাশাপাশি অবস্থিত দুই বা ততোধিক নদী অববাহিকা যে উচ্চভূমি দ্বারা পৃথক থাকে, তাকে (Water-Shed Or, Water-Parting) বলে । সাধারণতঃ পাহাড় – পর্বত, মালভূমি ইত্যাদি জলবিভাজিকার ভূমিকা পালন করে ।

6. গিরিখাত কাকে বলে?

Ans:- আর্দ্র পার্বত্য অঞ্চলে নদীর ব্যাপক নিম্ন ক্ষয়ের ফলে যে সংকীর্ণ ‘V’ আকৃতির গভীর উপত্যকা সৃষ্টি হয় তাকে গিরিখাত বলে। উদাহরণ:

সিন্ধু, শতদ্রু ও তিস্তা প্রভৃতি নদীর গতিপথে এরকম গিরিখাত দেখতে পাওয়া যায়।

7. ক্যানিয়ন কাকে বলে?

Ans:- কঠিন শিলায় গঠিত শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে নদী প্রবাহিত হলে জলের অভাবের কারণে নদী অত্যন্ত সংকীর্ণ ও গভীর ‘I’ আকৃতির উপত্যকা গঠন করে, শুষ্ক অঞ্চলের এরূপ উপত্যকা বা গিরিখাতকে ক্যানিয়ন বলে।

৪. আবদ্ধ শৈলশিরা কী?

Ans:- নদীর উচ্চ গতিতে বা পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে নদী চলাচল করার সময় বিভিন্ন পাহাড় বা শৈলশিরা থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী একে বেঁকে প্রবাহিত হয় এবং দূর থেকে দেখলে মনে হয় শৈলশিরা গুলি পরস্পর শৃংখলের মতো আবদ্ধ রয়েছে। এই প্রকার ভূমিরূপ কে আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা বলে।

উদাহরণ,:- হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে তিস্তা তোর্সা মহানন্দা প্রবৃত্তি নদীর গতিপথে এরকম আবদ্ধ শৈলশিরা দেখা যায়।

9. প্রপাতকুপ কী?

Ans:- জলপ্রপাতের জল প্রবল বেগে যেখানে পড়ে সেখানে বিশালাকার গহ্বরের মত সৃষ্টি হয়, একে প্রপাত কূপ (Plunge Pool) বলে

10. স্বাভাবিক বাঁধ কী?

Ans:-সমভূমি ও বদ্বীপ প্রবাহে ভূমির ঢাল কম থাকে বলে নদী ধীরগতিতে প্রবাহিত হয় এবং নদীখাত প্রশস্ত কিন্তু অগভীর হয়। জলের সঙ্গে যেসব পলি, বালি, কাদা প্রভৃতি বাহিত হয়ে আসে। নদী আর সেগুলি বহন করে আনতে পারে না। সেগুলি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হতে থাকে। এইভাবে ক্রমাগত নদীর দুই তীরে পলি সঞ্চিত হওয়ার ফলে তা বাঁধের মতো উঁচু হয়ে যায়। এই বাঁধ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় বলে একে বলা হয় স্বাভাবিক বাঁধ (natural levee)। উদাহরণ – মধ্য ও নিম্নগতিতে গঙ্গানদীর দুই তীরে এবং মিশরে নীলনদের দুই পাশে উঁচু স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়।

11. হিমবাহ কাকে বলে?

Ans:- স্থলভাগের সুনির্দিষ্ট খাত বা উপত্যকা বরাবর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে জমাট বাঁধা বরফ অত্যন্ত ধীরগতিতে ঢাল বরাবর নিচের দিকে নামতে থাকে, এই প্রবহমান বরফের নদীকে হিমবাহ বা glacier বলে । 

12. হিমশৈল কাকে বলে?

Ans:- মহাদেশীয় হিমবাহ ছড়িয়ে গিয়ে সমুদ্রের নিকটে পৌঁছালে সমুদ্রের স্রোত ও তরঙ্গের ধাক্কায় হিমবাহের প্রান্ত ভাগ ভেঙ্গে গিয়ে জলে ভাসতে থাকে। সমুদ্র জলে এই ভাসমান বরফের স্তুপ কে হিমশৈল বলে।

13. হিমরেখা কাকে বলে?

Ans:- ভূ-পৃষ্ঠের উপর যে কাল্পনিক রেখার উপরে সারাবছর বরফ জমে থাকে এবং সেই রেখার নীচে বরফ নামলে তা গলে তরলে পরিণত হয় সেই কাল্পনিক রেখাকেই বলা হয় হিমরেখা।

14. পিরামিড চূড়া কী?

Ans:- যখন একটি পাহাড়ের বিভিন্ন দিক থেকে তিন-চারটি করি বা সার্ক পাশাপাশি এক সঙ্গে বিরাজ করে, তখন এদের মধ্যবর্তী খাড়া পর্বত চূড়াটিকে পিরামিডের মতো দেখায় । পিরামিডের মতো আকৃতিবিশিষ্ট এই ধরনের পর্বত চূড়াকে পিরামিড চূড়া [Pyramidal Peak] বলে ।উদাহরণ: আল্পস পর্বতের ম্যাটারহর্ণ এবং গঙ্গোত্রীর কাছে অবস্থিত হিমালয় পর্বতের নীলকন্ঠ ও শিবলিঙ্গ শৃঙ্গ দুটি পিরামিড চুড়ার [Pyramidal Peak] উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ।

15. গ্রাবরেখা কাকে বলে?

Ans:- গ্রাবরেখা বা অধঃক্ষিপ্ত হিমবাহ হলো হিমবাহের অবক্ষেপণ বা সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিক্ষয়। হিমবাহ অগ্রসর হওয়ার সময় এর সাথে যেসব পাথরখণ্ড, বালি, কাদা প্রভৃতি বাহিত হয়, হিমবাহ গলতে শুরু করলে সেগুলি হিমবাহের প্রবাহপথের আশে পাশে সঞ্চিত হতে থাকে। এই অসংবদ্ধ মিশ্র পদার্থের সঞ্চয়কে গ্রাবরেখা বা অধঃক্ষিপ্ত হিমবাহ বলে।

16. হিমদ্রোণি কাকে বলে?

Ans:- হিমবাহের ক্ষয়কাজের ফলে নানা রকম ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, U -আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণী হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ যে উপত্যকার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় যেখানে হিমবাহের ক্রমাগত পার্শ্বক্ষয় ও নিম্নক্ষয় সমানভাবে হওয়ার ফলে উপত্যাকার তলদেশ প্রশস্ত ও মসৃণ এবং পার্শ্বদেশ খাড়া ঢালযুক্ত হয় । ফলে পার্বত্য উপত্যকাটির আকৃতি ইংরেজি ‘U’ -অক্ষরের মতো হয়ে যায়, একে U -আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণি বলে । 

17. ‘Basket of Eggs Relief বলতে কী বোঝো?

Ans:- ড্রামলিন সাধারণত ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায়, তাই ড্রামলিন অধ্যুষিত অঞ্চলকে ডিম ভর্তি ঝুড়ি (Basket of egg topography) বলা হয় । ড্রামলিন সাধারণত ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায়, তাই ড্রামলিন অধ্যুষিত অঞ্চলকে ডিম ভর্তি ঝুড়ি (Basket of egg topography) বলা হয় । ধারণা করা হয় পৃথিবীর সব মহাদেশগুলো অতীতে একই ভূখণ্ডে ছিল।

18. ইনসেলবার্জ কী?

Ans:- মরু অঞ্চলে কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত কোন অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়। কেবলমাত্র অপেক্ষা কিন্তু কঠিন শিলাস্তর কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ভূমিভাগ থেকে উঁচুতে ক্ষয়জাত পর্বত বা টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে। এদের ইনসেলবার্জ (Inselberg) বলে।

উদাহরণ- দক্ষিণ আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমিতে ও অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি অঞ্চলে এই ধরনের ভূমিরূপ পরিলক্ষিত হয়।

19. বালিয়াড়ি কাকে বলে?

Ans:- মরু অঞ্চলে বালির পাহাড়গুলিকে বালিয়াড়ি বলে । বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে শিলাধূলি ও বালির সৃষ্টি হয়, সেগুলি আবার কোথাও কোথাও জমা হয়ে নতুন ভূমিরূপ গঠন করে । বায়ুপ্রবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে কোনো বিস্তীর্ণ স্থান জুড়ে উঁচু ও দীর্ঘ বালির স্তূপ গঠিত হলে তাকে বালিয়াড়ি (Sand Dune) বলে ।

20. সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে?

Ans:- নদীর জলপ্রবাহ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে কোনও প্রাচীন মালভূমি অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে ক্রমশ ক্ষয় পেতে পেতে এক সময় উঁচু-নীচু ঢেউ খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায় ভূমি বলা হয়. 

21. অবরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে?

Ans:-  যে সকল প্রক্রিয়া নগ্নীভবন এবং ক্ষয়ীভবনের দ্বারা ভূমির উচ্চতা হ্রাস করে তাকে অবরোহণ বলে। এই প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতার হ্রাস ঘটে।

22. আরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে?

Ans:- যে বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়জাত পদার্থ ভূপৃষ্ঠের নিচ অংশে সঞ্চিত হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধি করে, তাকে আরোহন প্রক্রিয়া বলে।

23. জলপ্রপাত কী?

Ans:- পার্বত্য প্রবাহে নদীর গতিপথে কঠিন শিলা ও কোমল শিলা অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে নদীর প্রবল স্রোতের ফলে কোমল শিলা কঠিন শিলা অপেক্ষা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে খাঁড়া ঢাল সৃষ্টি করে । ফলে নদী ঐ খাঁড়া ঢালের উপর দিয়ে সরাসরি নিচে পড়তে থাকে । একে জলপ্রপাত (Waterfalls) বলে ।

24. নদীর পুনর্যৌবন লাভ বলতে কী বোঝো?

Ans:- একটি ক্ষয়চক্র সম্পুর্ণ হতে দীর্ঘ সময় লাগে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা শেষ পর্যায়ে পৌছাবার আগেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন ঘটলে বা সমুদ্রজলতলের পরিবর্তন ঘটলে নদীঢালের সামঞ্জস্য নষ্ট হয় । এর ফলে নদী তার ঢালের সামঞ্জস্য পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য নতুনভাবে তার ক্ষয়কার্য দ্রুত গতিতে শুরু করে অর্থাৎ নদী তার বার্ধক্য অবস্থা থেকে পুনরায় যৌবন অবস্থাপ্রাপ্ত হয় । একে নদীর পুনর্যৌবনলাভ (Rejuvenation) বলে 

25. বাথান কী?

Ans:- বাথান’ শব্দের অর্থ গবাদি পশুর বিশাল সুবিস্তৃত গো-চারণ ভূমি বা আবাসস্থল। ‘বাথান’ শব্দটি প্রাকৃত ভাষা থেকে আগত। বর্তমানে গবাদি পশুর পালনের জন্য আধুনিক খামারব্যবস্থা গড়ে উঠলেও প্রাচীনকালে এমন ছিল না। তাই সেই যুগে বেশিসংখ্যক গবাদি পশু লালন-পালনের জন্য তৃণভূমি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল বাথান

26. পেডিমেন্ট কী?

Ans:- শুষ্ক মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে উচ্চভূমির পাদদেশে সৃষ্ট মৃদু ঢাল বিশিষ্ট ভূমিভাগকে পেডিমেন্ট বলে।

27. বাজাদা কী?

Ans:- মরু অঞ্চলে পর্বত পাদদেশীয় সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত জলধারা ও বায়ু দ্বারা বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে অল্প ঢালু সমভূমি সৃষ্টি হয় তাকে বাজাদা বলে।

28. লোয়েস কী?

Ans:- প্রবল বায়ু প্রবাহ দ্বারা মরু ও মরু প্রায় অঞ্চলে হলুদ ও ধূসর বর্ণের খনিজ সমৃদ্ধ সূক্ষ্ম বালুকণা পরিবাহিত হয়ে বহুদূরে কোন নিচুস্থানে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি সৃষ্টি করে তাকে লোয়েস সমভূমি বলে।

*মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এরূপ ভূমিরূপ কে ‘অ্যাডব‘ ও মধ্য ইউরোপে ‘লিমন‘ নামে পরিচিত।

দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় 3 নং প্রশ্ন উত্তর / মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় 3 নং প্রশ্ন উত্তর

বিভাগ-ঘ:- সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্ন: (প্রশ্নমান–3)

1. অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ কীভাবে সৃষ্টি হয়?

Ans:- অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ তৈরির পর্যায়সমূহ : মধ্যগতির শেষের দিকে এবং নিম্নগতিতে নদীর প্রবাহপথে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের (ox-bow lake) সৃষ্টি হয়। এই হ্রদ সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়গুলি হল—

1. এই সময় নদীর গতিবেগ খুব কম থাকে বলে সামান্য কোনাে বাধা পেলেই নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথকে বলা হয় মিয়েন্ডার।

2. নদী যখন এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয় তখন প্রবাহপথের অন্তঃবাঁকের (উত্তল পাড়) তুলনায় বহিঃবাঁকে (অবতল পাড়) গতিবেগ বেশি থাকে। তাই বহিঃবাঁকে ক্ষয়কার্য চলে, কিন্তু অন্তঃবাঁকে পলি, কাদা ইত্যাদি সঞ্জিত হয়।

3. নদী যখন খুব বেশি এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়, দুই বাঁক বা জলধারার মধ্যবর্তী ভূমি কালক্রমে সম্পূর্ণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় (বহিঃবাঁকে ক্ষয় প্রক্রিয়ার জন্য)।

4. ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার ফলে তখন নদীর ওই দুটি বাঁক বা জলধারার সংযুক্তি ঘটে, অর্থাৎ বাঁকা পথ ছেড়ে নদী তখন সােজা পথে প্রবাহিত হয়। আর পরিত্যক্ত বাঁকটি হ্রদে পরিণত হয়। এই হ্রদ দেখতে ঘােড়ার খুরের মতাে হয় বলে এর নাম অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ।

2. প্লাবনভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়? 

Ans:- অবস্থান : নদীর মধ্য ও নিম্ন গতিতে নদীর সঞয়কার্যের ফলে প্লাবনভূমির (flood plain) সৃষ্টি হয়। 

সৃষ্টির কারণ : নদীতে হঠাৎ জলপ্রবাহের পরিমাণ বেড়ে গেলে বন্যা বা প্লাবন দেখা দেয়। এ সময় দুই তীর বা কূল ছাপিয়ে সেই জল অনেক দূর পর্যন্ত প্লাবিত করে। নদীর জলের সঙ্গে যেসব পলি, বালি, কাদা থাকে সেগুলিও জলের সঙ্গে বিস্তীর্ণ অঞলে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বন্যা শেষে ওই জল যখন নদীতে ফিরে আসে, তখন নদীর গতিবেগ কম থাকে বলে নদীবাহিত পদার্থের সবটা নদীখাতে ফিরে আসে না, অনেকটাই প্লাবিত অঙুলে সঞ্চিত হয়। এইভাবে বছরের পর বছর নদীর দুই পাশে বা উপত্যকায় পলি, বালি, কাদা সঞ্চিত হতে হতে নতুন যে ভূমিভাগ গঠিত হয়, তাকে বলা হয় প্লাবনভূমি বা প্লাবন সমভূমি। উদাহরণ : বিহারে গঙ্গা নদীর গতিপথের দুই পাশে এবং অসম উপত্যকায় ব্রম্মপুত্র নদের দুই পাশে এই ধরনের প্লাবনভূমি দেখা যায়।

3. বদ্বীপ কীভাবে গঠিত হয়?

Ans:- বদ্বীপ একটি প্রাকৃতিক ভূমি, যা নদীর মোহনায় দীর্ঘদিনের জমাট পলি অথবা নদীবাহিত মাটির সৃষ্ট দ্বীপ।[১][২] একটি নদী বয়ে গিয়ে যখন কোন জলাধার, হ্রদ, সাগর কিংবা মহাসাগরে পরে তখন নদীমুখে বদ্বীপ তৈরী হয়। এটাই বদ্বীপ।

নদী পলিমাটি বয়ে নিয়ে মূলত তিন ভাবে বদ্বীপ তৈরী করতে পারে; প্রথমত, নদী যদি স্থির কোন জলাধার যেমন, হ্রদ, উপসাগর, সাগর বা মহাসাগরে পতিত হয়, দ্বিতীয়ত, অপর আরেকটি নদীর সাথে মিলিত হয় এবং দ্বিতীয় নদী যদি প্রথম নদীর সাথে তাল মিলিয়ে পলিমাটি সরাতে না পারে তবে এবং তৃতীয়ত, এমন কোন ভুমধ্য অঞ্চল যেখানে নদীর পলি স্থলভাগে ছড়িয়ে পড়ে।

4. জলপ্রপাতের পশ্চাদপসারণ বলতে কী বোঝো?

Ans:- পার্বত্য প্রবাহে নদীর গতিপথে আড়াআড়ি ভাবে কোনো কঠিন শিলা থাকলে, সেই কঠিন শিলা পাশের কোমল শিলা থেকে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয় পায় এবং কালক্রমে উঁচু হয়ে থাকে। নদীস্রোত সেই খাড়া ঢাল থেকে বিপুল বেগে নিচের কোমল শিলায় পড়ে জলপ্রপাতের (Walerfalls) সৃষ্টি করে। নদীর গতিপথের যে অংশে জলপ্রপাতের জলধারা সজোরে এসে পড়ে সেখানে এই জলধারা সজোরে এসে পড়ার ফলে মন্থকূপের সৃষ্টি হয় যাকে প্রপাতকূপ (Plunge-pool) বলে। জলপ্রপাতের উপস্থিতির ফলে নিচের কোমল শিলাস্তরের ভিতরের অংশের দ্রুত ক্ষয় হওয়ায় এই ধরনের জলপ্রপাত ধীরে ধীরে পিছনের দিকে সরে আসতে থাকে, একে জলপ্রপাতের পশ্চাদপসরণ বলে। দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলার অ্যাঞ্জেল জলপ্রপাতটি হল পৃথিবীর  উচ্চতম জলপ্রপাত।

5. গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

Ans:- গিরিখাত :-

আকৃতি:- গিরিখাত খুব গভীর ও সংকীর্ণ (ইংরেজি অক্ষর ‘v’ আকৃতির) হয়।

সৃষ্টিস্থল:- এর সৃষ্টি হয় নদীর উচ্চগতিতে বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে।

আকৃতিগত তারতম্য কারণ :- গিরিখাতে নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় বেশি হলেও বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে সৃষ্ট হয় বলে নদীর দুই পাড়ের ক্ষয়ও কিছু কিছু চলতে থাকে এবং কিছু উপনদী এসেও নদীখাতে মিলিত হয়। এজন্য নদীখাত ‘v’-আকৃতির হয়। উদাহরণ—ইয়াংসি নদীর ইচাং গিরিখাত।

       ক্যানিয়ন:- 

আকৃতি:- ক্যানিয়ন অত্যন্ত সুগভীর এবং খুব বেশি সংকীর্ণ (ইংরেজি ‘I’ আকৃতির) হয়।

সৃষ্টিস্থল:- এর সৃষ্টি হয় বৃষ্টিহীন শুষ্ক বা মরুপ্রায় উচ্চভূমি অঞ্চলে।

আকৃতিগত তারতম্য কারণ :- ক্যানিয়ন সৃষ্টি হয় সেইসব প্রধানত তুষারগলা জলে এবং প্রবাহিত হয় শুষ্ক বা মরুপ্রায় অঞ্চলের ওপর দিয়ে। সুতরাং, এখানে বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীর দুই পাড়ের ক্ষয় হয় না এবং উপনদী এসেও মিলিত হয় না বলেই নদীখাত ‘I’-আকৃতির হয়। উদাহরণ : কলােরাডাে নদীর 

6. ড্রামলিন ও রসেমতানের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

Ans:- ড্রামলিন:- 

সংজ্ঞা:- হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ওলটানো চামচের ন্যায় শিলাস্তূপকে ড্রামলিন বলে।

বৈশিষ্ট:- হিমবাহ যেদিকে প্রবাহিত হয় সেই দিকে ড্রিমলিনের অমুসৃণ অংশের সৃষ্টি হয় এবং হিমবাহের প্রবাহের বিপরীত দিকে ড্রিমলিনের মসৃণ অংশ গঠিত হয়।

অবস্থান:- ড্রামলিন সাধারণত পার্বতের পাদদেশীয় অঞ্চলে দেখা যায়|

          রসে মতানে:- 

সংজ্ঞা:- হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট উঁচু ঢিবির ন্যায় শিলাস্তূপকে রসে মতানে বলে।

বৈশিষ্ট:- হিমবাহ যেদিকে প্রবাহিত হয় রসে মতানের সেই দিকে মসৃণ হয় এবং হিমবাহের প্রবাহের বিপরীত দিকে রসে মতানের অমসৃণ অংশ গঠিত হয়।

অবস্থান:- রসে মতানে সাধারণত উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে দেখা যায়।

7. ঝুলন্ত উপত্যকায় জলপ্রপাত গঠিত হয় কেন? 

Ans:- ঝুলন্ত উপত্যকায় জলপ্রপাত গঠিত হওয়ার কারণ: পার্বত্য অঞলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে প্রধান বা মূল হিমবাহ উপত্যকা এবং উপহিমবাহ উপত্যকার মধ্যে গভীরতার পার্থক্য হয়। একারণে উভয়ের মিলনস্থলে কম গভীরতাবিশিষ্ট উপহিমবাহ উপত্যকাটি মূল হিমবাহের উপত্যকার ওপর ঝুলন্ত উপত্যকা রূপে অবস্থান করে। পরবর্তীকালে, উপত্যকা দুটিতে হিমবাহ গলে গিয়ে নদী উৎপন্ন হলে, উচ্চতা ও ঢালের পার্থক্যের কারণে কম গভীরতাবিশিষ্ট উপহিমবাহ উপত্যকার নদীটির নীচে অবস্থিত প্রধান উপত্যকার ওপর প্রবলবেগে পতিত হয়। তাই ঝুলন্ত উপত্যকায় জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়।

উদাহরণ: বদ্রীনাথের কাছে অবস্থিত বসুধারা জলপ্রপাত।

৪. গ্রাবরেখার শ্রেণিবিভাগ করো।

Ans:- পার্শ্ব গ্রাবরেখা: হিমবাহের প্রবাহপথের দুপাশে স্তূপাকারে সঞ্চিত পদার্থ। হিমবাহের ধারে ধারে পাথর, বালি, এবং নুড়ি পড়ে এই গ্রাবরেখা তৈরি হয়। উদাহরণ: নরওয়ের Jostedalsbreen হিমবাহের পার্শ্ব গ্রাবরেখা।

মধ্য গ্রাবরেখা: দুটি পার্শ্ব গ্রাবরেখার মিলিত অংশ। হিমবাহের দুপাশের পার্শ্ব গ্রাবরেখা একত্রিত হয়ে এই গ্রাবরেখা তৈরি করে। উদাহরণ: গ্রিনল্যান্ডের Ilulissat Icefjord-এর মধ্য গ্রাবরেখা।

প্রান্ত গ্রাবরেখা: হিমবাহের প্রান্তে সঞ্চিত পদার্থ। হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে এই গ্রাবরেখা তৈরি হয়। উদাহরণ: আলাস্কার Mendenhall Glacier-এর প্রান্ত গ্রাবরেখা।

ভূমি গ্রাবরেখা: হিমবাহের তলদেশে সঞ্চিত পদার্থ। হিমবাহের ঘর্ষণের ফলে শিলা খসে পড়ে এই গ্রাবরেখা তৈরি হয়। উদাহরণ: অ্যান্টার্কটিকার Lambert Glacier-এর ভূমি গ্রাবরেখা।

বলয়ধর্মী গ্রাবরেখা: বলয়ের আকারে সঞ্চিত পদার্থ। হিমবাহের বারবার গলে এবং পুনরায় জমা হওয়ার ফলে এই গ্রাবরেখা তৈরি হয়। উদাহরণ: কানাডার Baffin Island-এর বলয়ধর্মী গ্রাবরেখা।

অবিন্যস্ত গ্রাবরেখা: কোনো নির্দিষ্ট স্তর না মেনে এলোমেলোভাবে সাজানো পদার্থ। হিমবাহের হঠাৎ থেমে যাওয়ার ফলে এই ধরনের গ্রাবরেখা তৈরি হতে পারে।

স্তরায়িত গ্রাবরেখা: স্বতন্ত্র স্তরে সাজানো পদার্থ। হিমবাহের দীর্ঘ সময় ধরে অগ্রসর হওয়ার ফলে বিভিন্ন সময়ের পদার্থ স্তরাক্রমে জমে এই ধরনের গ্রাবরেখা তৈরি হয়।

অদ্রব্য গ্রাবরেখা: হিমবাহের গলিত পানিতে দ্রবীভূত না হওয়া পাথরের টুকরা দ্বারা গঠিত গ্রাবরেখা।

9. নদী উপত্যকা ও হিমবাহ উপত্যকার মধ্যে পার্থক্য লেখো।

Ans:- নদী উপত্যকা:- 

  1. মেরু প্রদেশের বরফাবৃত অঞ্চল এবং উষ্ণ ও শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চল ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে নদী উপত্যকার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
  2. পার্বত্য অঞ্চলে নদী উপত্যকা প্রধানত ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো হয়।
  3. পার্বত্য ও উচ্চ সমভূমি অঞ্চলে নদী স্রোতের গতিবেগ প্রবল হয়, নিম্নভূমিতে নদী স্রোতের গতি ধীরে কমে আসে।

হিমবাহ উপত্যকা:- 

  1. কেবলমাত্র বরফে ঢাকা উঁচু পার্বত্য অঞ্চল এবং হিমশীতল মেরু অঞ্চলেই হিমবাহ উপত্যকার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
  2. হিমবাহ উপত্যকা ইংরেজি ‘U’ অক্ষরের মতো হয়।
  3. বেশিরভাগ সময়েই হিমবাহ অত্যন্ত ধীরগতিতে প্রবাহিত হয়।

10. মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্য বেশি দেখা যায় কেন?

Ans:- মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্যের কারণ : মরু অঞলের প্রাকৃতিক পরিবেশে বায়ুর কার্যের প্রাধান্যলাভের প্রধান কারণগুলি হল— 

1.  উন্নতার প্রসর:- মরু অঞলে দৈনিক ও বার্ষিক উয়তার প্রসর খুব বেশি হওয়ায় যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শিলা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালিকণায় পরিণত হয়। এই বালিকণাই হল বায়ুর কাজের প্রধান হাতিয়ার। বায়ু এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালিকণাগুলি দিয়ে অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের শিলা যেমন ক্ষয় করে, তেমনই এগুলি উড়িয়ে নিয়ে অন্যত্র জমা করে ভূমিরূপ গঠন করে। 

2 . উদ্ভিদের স্বল্পতা:- মরু অঞলে গাছপালা বিশেষ না থাকায় ভূমি সবসময় অনাবৃত থাকে। ফলে বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবলবেগে বইতে পারে।

3. বৃষ্টিপাতের অভাব:- মরু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত খুব কম হওয়ার জন্য বায়ু এবং ভূমি উভয়ই যথেষ্ট শুষ্ক থাকে। ফলে বায়ুপ্রবাহ সহজেই ভূমি থেকে প্রচুর পরিমাণে বালুকণা তুলে নিতে পারে। প্রবলবেগে প্রবাহিত ওই বালুপূর্ণ বায়ুই ক্ষয়, বহন বা অপসারণ এবং অধঃক্ষেপণ বা সয়কাজের মাধ্যমে মরু অঞ্চলে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভূমিরূপ গঠন করে।

11. ইয়ারদাঙ ও জুইগেনের মধ্যে পার্থক্য লেখো। 

Ans:- 1. শিলার অবস্থান:

ইয়ারদাং: কঠিন ও কোমল শিলাস্তর পর্যায়ক্রমে লম্বভাবে অবস্থান করে।

জিউগেন: কঠিন ও কোমল শিলাস্তর অনুভূমিকভাবে অবস্থান করে।

2. আকৃতি:

ইয়ারদাং: ইয়ারদাং বিচিত্র প্রকৃতির শৈলশিরার মতো দেখতে হয়।

জিউগেন: জিউগেন ব্যাঙের ছাতার মতো দেখতে হয়।

3. গঠন:

ইয়ারদাং: নিচের অংশ মোটা ও উপরের অংশ তীক্ষ্ণ প্রকৃতির হয়।

জিউগেন: নিচের অংশ সরু ও উপরের অংশ মোটা হয়।

4. উচ্চতা:

ইয়ারদাং: ইয়ারদাং এর উচ্চতা 6 মিটার পর্যন্ত হয়।

জিউগেন: জিউগেন 3-30 মিটার পর্যন্ত উচ্চ হয়।

5. ঢাল:

ইয়ারদাং: এর দুপাশে অসমান ঢালযুক্ত ও অপ্রতিসম প্রকৃতির হয়।

জিউগেন: এর দুপাশে সমান ঢালযুক্ত ও প্রতিসম প্রকৃতির

12. ইনসেলবার্জ ও মোনাডনক মধ্যে পার্থক্য লেখো।

Ans:- ইনসেলবার্জ:- 

সংজ্ঞা:- মরু অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত কঠিন শিলাস্তর কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ভূমিভাগ থেকে উঁচুতে ক্ষয়জাত পর্বত বা টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে। এদের ইনসেলবার্জ (Inselberg) বলে।

সৃষ্টির প্রক্রিয়া:- ইনসেলবার্জ বায়ুর ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত হয়।

জলবায়ু অঞ্চল:- ইনসেলবার্জ শুষ্ক মরু ও মরুপ্রায় জলবায়ুতে গড়ে ওঠে।

        মোনাডনক:-

সংজ্ঞা:- তরঙ্গায়িত পাথুরে ভূমি বা সমপ্রায় ভূমির ওপর অপেক্ষাকৃত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত কম ক্ষয়প্রাপ্ত টিবির মতো আকৃতি বিশিষ্ট পাহাড়গুলিকে মোনাডনক বলে।

সৃষ্টির প্রক্রিয়া:- মূলত নদীর ক্ষয় প্রক্রিয়ার ফলে মোনাডনকের সৃষ্টি হয়।

জলবায়ু অঞ্চল:- আর্দ্র কান্তীয় ও উপক্রান্তীয় কিংবা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলেও মোনাডনক গড়ে ওঠে।

13. জলপ্রপাতের শ্রেণিবিভাগ করো।

Ans:- জলপ্রপাতের শ্রেণিবিভাগ : ভূবিজ্ঞানীরা নদীখাতে জলের পরিমাণ ও ভূমির ঢাল অনুসারে জলপ্রপাতকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেন। এগুলি হল— 1. র‍্যাপিড, 2. কাসকেড, 3. ক্যাটারাক্ট।

1. র‍্যাপিড : জলপ্রপাতের ঢাল কম হলে তাকে র‍্যাপিড বলা হয়। এই ধরনের জলপ্রপাতের উচ্চতা মাত্র কয়েক মিটার হয়।

উদাহরণ : ছােটোনাগপুরের মালভূমি অঞলে এরকম জলপ্রপাত প্রায়ই দেখা যায়।

2. কাসকেড : যখন কোনাে জলপ্রপাতের জল অজস্র ধারায় বা সিঁড়ির মতাে ঢাল বেয়ে ধাপে ধাপে নীচের দিকে নামে, তখন তার নাম কাসকেড।

উদাহরণ : রাঁচির জোনা জলপ্রপাত। 

3. ক্যাটারাক্ট : জলপ্রপাত যখন প্রবলবেগে, ভয়ংকরভাবে ফুলেফেঁপে উত্তাল জলরাশি নিয়ে অতল গহ্বরে ঝাপিয়ে পড়ে, তখন তার নাম ক্যাটারাক্ট।

উদাহরণ : আফ্রিকার নীল নদে খাম থেকে আসােয়ান পর্যন্ত অংশে মােট 6টি ক্যাটারাক্ট দেখা যায়।

14. বদ্বীপ গঠনের অনুকূল পরিবেশগুলি লেখো।

Ans:- ব-দ্বীপ সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশঃ-

নদী মোহনার নিকট নদীবাহিত অতি সূক্ষ্ম পলিসমূহ সঞ্চিত হয়ে ব-দ্বীপ গঠন করে। এই ব-দ্বীপ গঠনের অনুকূল অবস্থাগুলি হল নিম্নরূপ—

১. মোহনায় নদীর স্রোত:

মোহনামুখে অর্থাৎ মোহনার কাছে নদীর স্রোত বা নদীর গতিবেগ কম হওয়া বাঞ্ছনীয়।

২. পলির পরিমাণ:

নদীর মোহনায় পলির পরিমাণ বেশি হতে হবে এবং একারণে অধিক পরিমাণ পলি সরবরাহের জন্য নদী অববাহিকার আয়তন বেশি হওয়া প্রয়োজন।

৩. অগভীর সমুদ্র:

নদীর মোহনার সম্মুখে সমুদ্রের গভীরতা কম হওয়া বাঞ্ছনীয়।

৪. লবণতার পরিমাণ:

মোহনা মুখে সমুদ্রজলের লবনতা অধিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ লবণতার সংস্পর্শে এসে নদীবাহিত পলি দ্রুত জমাটবদ্ধ হয়।

৫. মোহনায় মৃদু ঢাল:

সমুদ্রের যে অংশে নদী এসে মিলিত হয় সেখানে সমুদ্রের দিকে ঢাল মৃদু হতে হবে।

৬. জোয়ার ভাটার প্রকোপ:

নদীর মোহনায় জোয়ার ভাটার প্রকোপ কম থাকা প্রয়োজন। তবেই ব-দ্বীপ গঠনের কাজ সহজ হয়।

৭. বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহ:

মোহনার কাছে নদীপ্রবাহের বিপরীত দিকে বায়ু প্রবাহিত হলে বদ্বীপ গঠনের কাজ দ্রুত হয়।

15. হিমবাহের শ্রেণিবিভাগ করো।

Ans:- হিমবাহের শ্রেণিবিভাগ : অবস্থান অনুযায়ী হিমবাহ তিন রকমের হয়— 

1.মহাদেশীয় হিমবাহ: উচ্চভূমি-নিম্নভূমি নির্বিশেষে মহাদেশের বিস্তীর্ণ স্থান যখন বরফে ঢাকা থাকে, তখন তার নাম মহাদেশীয় হিমবাহ।

অবস্থান: অ্যান্টার্কটিকা (প্রায় 85%) এবং গ্রিনল্যান্ডে এই ধরনের হিমবাহ রয়েছে। বর্তমানে দুই মেরু অঞলের বিস্তীর্ণ বরফক্ষেত্র মহাদেশীয় হিমবাহের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বরফের স্থূপ যেন চাদরের মতাে (ice sheet) দুই মেরু অঞ্চলকে ঢেকে রেখেছে।

বৈশিষ্ট্য: [a] এগুলি কেন্দ্র থেকে পাতের আকারে চারদিকে প্রসারিত এবং দেখতে অনেকটা কচ্ছপের পিঠের মতাে। [b] এই হিমবাহের প্রান্তদেশের বরফ খুব পাতলা হয়। [c] মহাদেশীয় হিমবাহ হিমসােপান সৃষ্টি করে। [d] মূলত কোয়াটারনারি ভূতাত্ত্বিক যুগে এই হিমবাহ সঞ্জিত হয়েছিল এমন ধারণা করা হয়।

উদাহরণ: অ্যান্টার্কটিকার ল্যামবার্ট এবং গ্রিনল্যান্ড আইস শিট হল। মহাদেশীয় হিমবাহের উদাহরণ।

2. পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ: পর্বতের উঁচু অংশ থেকে হিমবাহ যখন নীচের দিকে ধীরে ধীরে নামতে থাকে, তখন তাকে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ বলে।

বৈশিষ্ট্য: [a] মনে করা হয় প্রাচীন তুষারযুগ থেকে এই বরফ সঞ্চিত হতে থাকে। [b] পার্বত্য হিমবাহ থেকেই মূলত নদীর সৃষ্টি হয়। [c] পার্বত্য হিমবাহ নানা ধরনের ফাটলযুক্ত হয়, অর্থাৎ এই হিমবাহেই বাগন্ড ও ক্রেভাস থাকে।

উদাহরণ: আলাস্কার হুবার্ড পৃথিবীর বৃহত্তম পার্বত্য হিমবাহ।

3. পাদদেশীয় হিমবাহ: হিমবাহ যখন উৎস অঞ্চল থেকে পর্বতের নীচের দিকে নেমে এসে পর্বতের পাদদেশ পর্যন্ত প্রসারিত হয়, তখন তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলে। সাধারণত উচ্চ অক্ষাংশে তীব্র ঠান্ডার জন্য পর্বতের পাদদেশের উন্নতা হিমাঙ্কের নীচে থাকে। তাই অসংখ্য পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ পর্বতের পাদদেশে এসে মিলিত হয়ে পাদদেশীয় হিমবাহ সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্য: [a] এগুলির আকার অপেক্ষাকৃত ছােটো হয়। [b] পাদদেশীয় হিমবাহের সামনে গােলাকার অংশকে লােব বা পাখা (fan) বলে। [c] উচ্চ অক্ষাংশে পর্বতের পাদদেশের সমতল অংশে দেখা যায়। [d] একাধিক উপত্যকা হিমবাহ পর্বতের পাদদেশে এসে পরস্পর মিলিত হয়ে গঠিত হয়।

উদাহরণ: আলাস্কার মালাসপিনা পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহের।

16. সিফ বালিয়াড়ির বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

Ans:- সিফ বালিয়াড়ির বৈশিষ্ট্য: প্রবহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠা খুব দীর্ঘ কিন্তু সংকীর্ণ বালিয়াড়িকে বলা হয় সিফ। এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

1. বিস্তার ও উচ্চতা : সিফ বালিয়াড়ি 100 কিলােমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর উচ্চতা 100 মিটার পর্যন্ত হতে পারে। 

2. সমান্তরাল অবস্থান : অনেকসময় পরস্পর সমান্তরালভাবে অনেকগুলি সিফ বালিয়াড়ি গড়ে উঠতে দেখা যায়।

3. শিঙের অবস্থান : কখনাে কখনাে প্রবল বায়ুপ্রবাহে অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়ি বা বারখানের মাঝের অংশ ক্ষয় হয়ে যায় এবং দুই পাশে শিঙের মতাে শিরা দুটি ক্রমশ বড়াে হয়ে অনুদৈর্ঘ্য বা সিফ বালিয়াড়িরূপে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠে। 

4. করিডাের : দুটি সিফ বালিয়াড়ির মধ্যবর্তী অংশকে করিডাের বলে। এর মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবলবেগে সােজাসুজি প্রবাহিত হয়।

5. আকৃতি : বালিয়াড়ির শীর্ষদেশ তীক্ষ্ণ করাত আকৃতির হয়।

17. ফিয়র্ড কী?

Ans:- সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে হিমবাহ তার উপত্যকাকে অনেকসময় এত গভীরভাবে ক্ষয় করে যে সেটি সমুদ্রের পৃষ্ঠতল থেকেও নীচু হয়ে যায় । পরে বরফমুক্ত হলে এটি সমুদ্রের জলে ডুবে যায় । জলমগ্ন এরকম উপত্যকাকে ফিয়র্ড (Fiord) বলে ।

উদাঃ নরওয়ের সোজনে ফিয়র্ড (পৃথিবীর গভীরতম) ।

বৈশিষ্ট্যঃ বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ

  1. এগুলি মুলত সমুদ্রোপকূলে দেখা যায় ।
  2. সাধারণত এগুলি জলমগ্ন থাকে ।

দশম শ্রেণির ভূগোল প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর / মাধ্যমিক ভূগোল প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর

বিভাগ – ঙ: দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন: (প্রশ্নমান-5)

1. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপসমূহ : বায়ুর ক্ষয়কার্যের প্রভাব সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায় শুষ্ক মরু অঞ্চলে। এই অঞ্চলে বায়ু প্রধানত তিনটি পদ্ধতিতে ক্ষয়কার্য করে, এগুলি হল— 1. অবঘর্ষ, 2. অপসারণ ও 3. ঘর্ষণ। এর ফলে কতকগুলি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, যেমন— (i) গৌর, (ii) জিউগেন, (iii) ইয়ারদাঙ, (vi) ইনসেলবার্জ, (v) অপসারণ গর্ত প্রভৃতি। 

1. অবঘর্ষের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : অবঘর্ষের ফলে মরু অঞ্চলে যে ভূমিরূপগুলির সৃষ্টি হয়, সেগুলি হল— 

(i) গৌর: উৎপত্তি: মরু অঞলে অবঘর্ষের জন্য বৃহদাকৃতির শিলাখণ্ডের নিম্নাংশ যত বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, ঊর্ধ্বাংশ ততটা হয় না l এ ছাড়া, কঠিন ও কোমল শিলাস্তরে এই ধরনের বৃহদায়তন শিলাখণ্ড গঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোমল শিলা গঠিত অংশটি যদি নীচের দিকে থাকে, তাহলে বায়ুর অবঘর্ষের ফলে নীচের অংশটি খুব বেশি ক্ষয়ে যায় এবং ওপরের অংশটি কম ক্ষয় পেয়ে সমগ্র শিলাখণ্ডটি ব্যাঙের ছাতার মতাে আকৃতিবিশিষ্ট হয়ে যায়। এই ধরনের শিলাখণ্ডকে গৌর বা গারা বা ব্যাঙের ছাতার মতাে শিলাস্তূপ  বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য: [a] এগুলি দেখতে ব্যাঙের ছাতার মতাে হয় বলে এগুলিকে Mushroom Rock বলে। [b] মরুভূমির মাঝে অবশিষ্ট টিলার মতাে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

উদাহরণ: সাহারা মরুভূমিতে গৌর আকৃতির অনেক শিলাস্তুপ

দেখাযায়। 

(ii) জিউগেন: উৎপত্তি: মরুভূমির যেসব স্থানে আড়াআড়িভাবে বা অনুভূমিকভাবে ওপরের স্তরে ফাটলযুক্ত কঠিন শিলা এবং নীচের স্তরে কোমল শিলা থাকে, সেখানে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে কোমল শিলাস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে খাতের আকার ধারণ করে। অন্যদিকে, কঠিন শিলাগঠিত অংশ কম ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় চ্যাপটা ও সমতল শীর্ষদেশবিশিষ্ট পরস্পর সমান্তরাল টিলার আকারে অবস্থান করে। এইভাবে দুটি খাতের মধ্যে চ্যাপটা শীর্ষদেশ বিশিষ্ট টিলার ন্যায় ভূমিরূপকে জিউগেন বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য: [a] জিউগেন 3-30 মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। [b] এদের উপারিভাগ চ্যাপটা ও সমতল হয়।

উদাহরণ: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সােনােরান মরু অঞ্চলে এই ভূমিরূপ দেখা যায়।

       চিত্র: ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিক অবস্থানে থাকা কঠিন ও কোমল শিলায় জিউগেনের সৃষ্টি। 

(iii) ইয়ারদাং: উৎপত্তি : কঠিন ও কোমল শিলাস্তর ভূপৃষ্ঠে পাশাপাশি উল্লম্বভাবে অবস্থান করলে বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় কোমল শিলাস্তরগুলি তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যায়। এর ফলে কঠিন শিলাস্তরগুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে বিচিত্র আকৃতির শৈলশিরার মতাে খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, এদের বলা হয় ইয়ারদাং।

বৈশিষ্ট্য: [a] ইয়ারদাঙের গড় উচ্চতা 6 মিটার। [b] এদের প্রস্থ 8-40 মিটার পর্যন্ত হয়। [c] ইয়ারদাংকে দেখতে মােরগের ঝুঁটির মতাে দেখতে হয় বলে একে Cock’s Comb Ridge বলে। [d] এদের শীর্ষদেশ সুচালাে হয়।

উদাহরণ: সৌদি আরবের মরু অঞলে এই ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়।

(iv)  ইনসেলবার্জ: উৎপত্তি: বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে সমগ্র মরু অঞলের সাধারণ উচ্চতা কমে গিয়ে যখন প্রায় সময়ভূমিতে পরিণত হয়, তখন তার মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে কঠিন শিলায় গঠিত অংশগুলি কোনােক্রমে ক্ষয়কার্য প্রতিরােধ করে অনুচ্চ ও পরস্পর সমান উচ্চতাবিশিষ্ট টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে। এই ধরনের ক্ষয়জাত পাহাড় বা টিলাকে বলা হয় ইনসেলবার্জ।

বৈশিষ্ট্য: [a] ইনসেলবার্জ সাধারণত আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলায় (গ্রানাইট, নিস প্রভৃতি) গঠিত হয়। [b] এগুলির উচ্চতা সাধারণত 30-300 মিটার হয়।

উদাহরণ: দক্ষিণ আফ্রিকার কালাহারি মরু অঞ্চলে এবং অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে অনেক ইনসেলবার্জ দেখা যায়।     

2. অপসারণের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : বায়ুর অপসারণের ফলে মরু অঞলে সৃষ্টি হয় অপসারণ গর্ত। 

অপসারণ গর্ত : উৎপত্তি: প্রবল বায়ুপ্রবাহ মরুভূমির বালিকে এক জায়গা থেকে আর-এক জায়গায় উড়িয়ে নিয়ে যায়। এর ফলে কখনাে কখনাে বিশাল এলাকাজুড়ে বালি অপসারিত হয়ে অবনত স্থান বা খাদ বা গর্ত সৃষ্টি হয়। এরই নাম অপসারণ গর্ত।

উদাহরণ: মিশরের কাতারা অবনত ভূমি। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম অপসারণ গর্ত। রাজস্থানের মরু অঞলে এই ধরনের ছােটোবড়াে বিভিন্ন আকৃতির গর্তকে স্থানীয় ভাষায় ধান্দ বলে। এ ছাড়াও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের গর্তকে বাফেলল গর্ত এবং মঙ্গোলিয়াতে প্যাংকিয়াং গর্ত বলা হয়। 

3. ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ: প্রবলবেগে প্রবাহিত বায়ুর সঙ্গে যেসব শিলাখণ্ড থাকে, সেগুলি পরস্পর ঠোকাঠুকি ও ঘর্ষণে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ক্রমশ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হতে হতে শেষে বালুকণায় পরিণত হয়। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শিলাচূর্ণ ও বালিকে একত্রে মিলেট সিড স্যান্ড বলে। এভাবে ঘর্ষণের মাধ্যমে মরু অঞ্চলে বালির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। বায়ুর ক্ষয়কার্যের শেষ পর্যায় হল এই বালিকণা।

2. বায়ুর সঞ্জয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- বায়ুর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপসমূহ : বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত উল্লেখযােগ্য ভূমিরূপগুলি হল— 

বালিয়াড়ি :

বালিপূর্ণ বায়ুর গতিপথে গাছপালা, বড়াে প্রস্তরখণ্ড, ঝােপঝাড় বা অন্য কোনােরকম বাধা থাকলে বায়ুবাহিত বালির কিছু অংশ সেখানে সঞ্চিত হয়ে ক্রমশ ঢিবির মতাে উঁচু হয়ে যায়। স্থূপাকারে সঞ্চিত এই বালির ঢিপিগুলিকে বলা হয় বালিয়াড়ি। 

উপবিভাগ: বিখ্যাত বিজ্ঞানী ব্যাগনল্ড বালিয়াড়িকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেন — (1) তির্যক বালিয়াড়ি এবং (2) অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি।

(1) তির্যক বালিয়াড়ি: যেসব বালিয়াড়ি বায়ুর গতির সঙ্গে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠে, তাদের বলে তির্যক বালিয়াড়ি। এদের আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায় — [i] বারখান, [ii] অ্যাকলে বালিয়াড়ি এবং [iii] রাের্ডস বালিয়াড়ি।

[i] বারখান: যেসব বালিয়াড়ি একেবারে অর্ধচন্দ্রের আকারে গড়ে ওঠে, সেই বালিয়াড়িগুলিকে বলে বারখান। উদাহরণ: সাহারা মরুভূমিতে অনেক বারখান দেখা যায়।

[ii] অ্যাকলে বালিয়াড়ি: একাধিক বারখান পরপর পাশাপাশি গঠিত হওয়ার ফলে যে আঁকাবাঁকা ও সারিবদ্ধ শৈলশিরার মতাে বালিয়াড়িশ্রেণির সৃষ্টি হয়, তাদের একত্রে অ্যাকলে বালিয়াড়ি বলা হয়। এই বালিয়াড়ির বাঁকের সামনের অংশকে লিংগুয়েড এবং পিছনের অংশকে বারখানয়েড বলে। 

[iii] রাের্ডস বালিয়াড়ি: যেসব তির্যক বালিয়াড়ি দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতাে সেই বালিয়াড়িগুলিকে বলে রাের্ডস বালিয়াড়ি। বিভিন্ন দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হলে বারখানগুলিই। রাের্ডস বালিয়াড়িতে পরিণত হয়। 

(2) অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি বা সিফ বালিয়াড়ি: যেসব বালিয়াড়ি বায়ুর গতিপথের সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠে, সেইসব বালিয়াড়িকে বলা হয় অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি। এদের মধ্যে যেগুলি খুব দীর্ঘ কিন্তু সংকীর্ণ, একেবারে তরবারির মতাে দেখতে, সেগুলিকে বলে সিফ বালিয়াড়ি।

উদাহরণ: থর মরুভূমিতে সিফ দেখা যায়।

(3) অন্যান্য বালিয়াড়ি: উল্লিখিত প্রধান দুই বালিয়াড়ি ছাড়াও উৎপত্তি, আকার ও অবস্থান অনুসারে আরও কয়েক ধরনের বালিয়াড়ি মরুভূমিতে দেখা যায়। তবে এগুলি অপ্রধান বালিয়াড়ি, যেমন —

[i] মস্তক বালিয়াড়ি: ঝােপঝাড়, প্রস্তরখণ্ড প্রভৃতির যে দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হয়, সেই দিকেই বালিয়াড়ি সৃষ্টি হলে তাকে মস্তক বালিয়াড়ি বলে।

[i] পুচ্ছ বালিয়াড়ি: প্রস্তরখণ্ড, গাছপালা প্রভৃতির যে দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হয় , ঠিক তার বিপরীত দিকে সরু ল্যাজের মতাে গড়ে ওঠা বালিয়াড়িকে বলে পুচ্ছ বালিয়াড়ি।

[iii] পার্শ্বস্থ বালিয়াডি: প্রস্তরখণ্ড, ঝােপঝাড় প্রভৃতির উভয়দিকে বালিয়াড়ি সৃষ্টি হলে তাকে পার্শ্বস্থ বালিয়াড়ি বলে। 

[iv] অগ্রবর্তী বালিয়াড়ি: মস্তক বালিয়াড়ির সামনে ঘূর্ণি বাতাসের

প্রভাবে সৃষ্ট বালিয়াড়ি অগ্রবর্তী বালিয়াড়ি নামে পরিচিত। 

[v] নক্ষত্র বালিয়াড়ি: বিভিন্ন দিক থেকে আসা বাতাসের মাধ্যমে প্রস্তরখণ্ড, গাছপালা প্রভৃতির বিভিন্ন দিকে বালিয়াড়ি সৃষ্টি হলে তাকে নক্ষত্র বা তারা বালিয়াড়ি বলে। 

[vi] অস্থায়ী বা চলমান বালিয়াড়ি: বেশিরভাগ বালিয়াড়িই বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরে সরে যায়। এদের বলে অস্থায়ী বা চলমান বালিয়াড়ি। রাজস্থানের মরু অঞ্চলে এই চলমান বালিয়াড়িকে বলে ধ্রিয়ান।

লােয়েস সমভূমি :

উৎপত্তি: মরুভূমির বালুকামিশ্রিত হলুদ রঙের শিথিল অতিসুক্ষ পলিকণা বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বহুদূর পর্যন্ত উড়ে গিয়ে সঞ্চিত হয়। একে লােয়েস বলে। এভাবে বায়ুবাহিত সূক্ষ্ম বালুকণা ও পলিকণা দীর্ঘপথ অতিক্রম করে সেখানকার বিস্তৃত এলাকায় সঞ্চিত হয়ে যখন সমভূমি সষ্টি করে। তখন তাকে লােয়েস সমভূমি বলে।

উদাহরণ: উত্তর চিনের হােয়াং নদীর উপত্যকায় এই লােয়েস সমভূমি দেখা যায়। মধ্য এশিয়ার গােবি মরুভূমি থেকে বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বালুকারাশি উড়ে এসে চিনের হােয়াংহাে নদীর উপত্যকায় সঞ্চিত হয়ে এই সমভূমি গঠন করেছে।

3. নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপসমূহ : উৎস থেকে মােহানা পর্যন্ত নদী তার গতিপথে তিনটি কাজ করে—ক্ষয়, বহন এবং সঞ্জয়। এগুলির মধ্যে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে যেসব ভূমিরূপ গঠিত হয় সেগুলি হল— 

1. ‘I’ আকৃতির উপত্যকা বা ক্যানিয়ন: 

উৎপত্তি : শুষ্ক ও প্রায়শুষ্ক পার্বত্য অঞলে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে ‘I’-আকৃতির নদী উপত্যকা বা ক্যানিয়নের সৃষ্টি হয়। কারণ, বৃষ্টিপাতের স্বল্পতার জন্য নদী উপত্যকাগুলির পার্শ্বদেশের বিস্তার কম, কিন্তু ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদীগুলির নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এজন্য নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ইংরেজি ‘I’ অক্ষরের মতাে দেখতে হয়। শুষ্ক ও প্রায়শুষ্ক পার্বত্য অঞলে সংকীর্ণ ও গভীর ‘I’-আকৃতির উপত্যকাকে ক্যানিয়ন বলা হয়। 

উদাহরণ : কলােরাডাে নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন (গভীরতা প্রায় 1857 মি)।

2. ‘V’ আকতির উপত্যকা বা গিরিখাত : 

উৎপত্তি : আর্দ্র ও আর্দ্রপ্রায় অঞ্চলে নদীর উচ্চ বা পার্বত্য প্রবাহে ভূমির ঢাল বেশি থাকায় নদীগুলি প্রবলভাবে নিম্নক্ষয় করে। এরূপ নিম্নক্ষয়ের কারণে নদী উপত্যকাগুলি যেমন সংকীর্ণ ও গভীর হয়ে ওঠে তেমনই আবহবিকার পুঞ্জিতক্ষয় ইত্যাদির প্রভাবে কিছু পরিমাণ পার্শ্বক্ষয়ও চলে। ফলে নদী উপত্যকা আগের থেকে চওড়া হয়ে ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতাে আকৃতি ধারণ করে। অতিগভীর ‘V’ -আকৃতির এই উপত্যকাকে বলা হয় গিরিখাত।

উদাহরণ : নেপালের কালী নদীর গিরিখাত। 

3. জলপ্রপাত : 

উৎপত্তি : নদীর জলপ্রবাহ যখন হঠাৎ কোনাে উচ্চস্থান থেকে নীচের দিকে লাফিয়ে পড়ে,তখন তাকে জলপ্রপাত বলে। নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল  শিলাস্তর ওপরে নীচে আড়াআড়িভাবে বা অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে, প্রবল স্রোতে ওপরের কঠিন শিলাস্তর ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার ফলে নীচের কোমল শিলাস্তর বেরিয়ে পড়ে। কোমল শিলাস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বলে, সেখানে খাড়া ঢালের সৃষ্টি হয় এবং নদীস্রোত খাড়া ঢাল থেকে প্রবল বেগে নীচে আছড়ে পড়ে জলপ্রপাতের সৃষ্টি করে। 

উদাহরণ: ভেনেজুয়েলার ক্যারােনি (Caroni) নদীর উপনদী চুরান (Churun) নদীর গতিপথে সৃষ্ট অ্যাঞ্জেল প্রপাতটি পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত।

4. প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল :

উৎপত্তি: জলপ্রপাতের নীচের অংশে জলের গতিবেগ ও শক্তি খুব বেশি থাকে। এজন্য জল যেখানে নীচে পড়ে, নদীখাতের সেই অংশে জলের আঘাতে এবং নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে বেশ বড়াে গর্ত সৃষ্টি হয়। হাঁড়ির মতাে দেখতে সেই গর্তকে বলে প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল।

উদাহরণ : মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারিতে লিটল ফল জলপ্রপাতের নীচে প্রপাতকূপ আছে।

5. মন্থকূপ বা পটহােল :

উৎপত্তি: উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর প্রবল স্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি প্রভৃতি ঘুরতে ঘুরতে নীচের দিকে অগ্রসর হয়। এর ফলে পরিবাহিত নুড়ি ও প্রস্তরখণ্ডের দ্বারা ঘর্ষণজনিত ক্ষয়ের কারণে নদীখাতে কূপের মতাে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়। এগুলিকে বলা হয় মন্থকূপ বা পটহােল। 

উদাহরণ: তিস্তা নদীর পার্বত্য প্রবাহে অনেক মন্থকূপ দেখা যায়।

6. শৃঙ্খলিত শৈলশিরা :

উৎপত্তি: পার্বত্য অঞ্চলে কঠিন শিলাগঠিত শৈলশিরাসমূহ নদীর গতিপথে অনেকসময় এমন বাধার সৃষ্টি করে যে, সেই বাধা এড়াতে নদী শৈলশিরাগুলির পাদদেশ ক্ষয় করে এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। তখন পরপর অবস্থিত ওই শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে শৃঙ্খলিত বা আবদ্ধ দেখায়। ফলে দূরথেকে দেখলে মনে হয় নদী ওই শৈলশিরাগুলির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। ওই শৈলশিরাগুলিকেই শৃঙ্খলিত শৈলশিরা বলে। 

উদাহরণ : পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং হিমালয়ে শৃঙ্খলিত শৈলশিরা দেখা যায়।

4. নদীর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- নদীর সঞয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপসমূহ : নদী পার্বত্য অঞ্চলে প্রধানত ক্ষয়কাজ করে এবং সমভূমি অঞলে সঞয়কাজ করে। নদীর এই সঞয়কাজের ফলে কতকগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়,

 যেমন—

               নদীর সঞয়কার্যের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ সম্পর্কে আলােচনা করা হল—

1. ত্রিকোণাকার পললভূমি বা পলল ব্যজনী:

উৎপত্তি: পার্বত্য অঞল ছেড়ে নদী সমভূমিতে এসে পড়লে, ভূমির ঢাল হঠাৎ কমে যায় বলে নদীর গতিবেগ এবং বহনক্ষমতা— উভয়ই হ্রাস পায়। এর ফলে সমভূমিতে অবতরণের স্থানে অর্থাৎ, পর্বতের পাদদেশে নদীখাতে পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি জমে ত্রিকোণাকার পললভূমি বা পলল শঙ্কু বা পলল ব্যজনী বা অ্যালুভিয়াল ফ্যানের সৃষ্টি হয়। 

এরপর নদী ওই পলল ব্যজনীর ওপর দিয়ে বিভিন্ন শাখায় ভাগ হয়ে প্রবাহিত হয়। এর ফলে ওই পলল ব্যজনী প্রায়-গােলাকার ভূমিতে ভাগ হয়ে যায়। যেহেতু এই অর্ধ বা প্রায়-গােলাকার ভূমিরূপ দেখতে হাতপাখার মতাে, এজন্য একে পলল ব্যজনী (হাতপাখা) বা পলল পাখা বলে। 

উদাহরণ: হিমালয়ের পাদদেশে গঙ্গার বিভিন্ন উপনদীর গতিপথে এই ধরনের ভূমিরূপ প্রায়শই দেখা যায়।

2. নদীচর বা বালুচর: উৎপত্তি: সমভূমিতে নদীর গতিবেগ কম থাকার দরুন পার্বত্য অঞ্চল থেকে বয়ে আনা নুড়ি, পাথর, বালি প্রভৃতি নদীবক্ষে সঞ্চিত হয়ে চরের আকারে জেগে ওঠে। একে নদীচর বা বালুচর বলে। 

উদাহরণ: অসম সমভূমিতে ব্ৰত্মপুত্র নদের মাজুলি দ্বীপটি ভারতের বৃহত্তম নদীচর বা নদীদ্বীপ|

3. নদী বাঁক :

উৎপত্তি : সমভূমিতে ভূমির ঢাল খুব কম বলে নদীর গতিবেগও কমে যায়। এর ফলে সামান্য বাধা পেলেই তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। এর মধ্যে বাঁকের যে অংশে নদীর স্রোত আঘাত করে সেখানে ক্ষয় হয় বলে অবতল বা খাড়া পাড় গঠিত হয়। এর ঠিক বিপরীত অংশে ক্ষয়িত পদার্থসমূহ সঞ্জিত হয়ে উত্তল বা ঢালু পাড় গঠিত হয়। এইভাবে নদীখাতে ক্রমান্বয়ে ক্ষয় ও সঞ্জয়ের জন্য নদীতে অসংখ্য বাঁক সৃষ্টি হয়, যেগুলির মধ্য দিয়ে নদী সাপের মতাে এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। এই বাঁকগুলিকেই বলে নদীবাঁক বা মিয়েন্ডার। (তুরস্কের মিয়েন্ডারেস নদীর নামানুসারে এই ভূমিরূপের নামকরণ হয় মিয়েন্ডার)। 

উদাহরণ : পূর্ব বর্ধমানের অগ্রদ্বীপের কাছে গঙ্গা নদীতে বহু নদীবাঁক দেখা যায়।

4. প্লাবনভূমি:

উৎপত্তি: সমভূমিতে ভূমির ঢাল কম থাকে বলে নদী ধীরগতিতে প্রবাহিত হয়। বর্ষাকালে গতিপথের এই অংশে নদীতে হঠাৎ জল বেড়ে গেলে নদীর দু-কূল ছাপিয়ে উপত্যকায় বন্যা বা প্লাবন হয়। প্লাবিত অঞ্চলে নদীর জলের সঙ্গে বাহিত কাদা, পলি, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে সমতলভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বলে প্লাবনভূমি বা প্লাবনসমভূমি। 

উদাহরণ : বিহারে গঙ্গা নদীর গতিপথের দুই পাশে প্লাবনভূমি দেখা যায়।

5. স্বাভাবিক বাঁধ:

উৎপত্তি: সমভূমিতে নদীর গতিবেগ কম থাকে বলে জলের সঙ্গে যেসব পলি, বালি, কাদা বাহিত হয়ে আসে, নদী সেগুলি আর বহন করতে পারে না। সেগুলি নদীর দুই তীরে ক্রমশ সঞ্চিত হতে হতে কালক্রমে বাঁধের মতাে উঁচু হয়ে যায়। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয় বলে এই বাঁধের নাম স্বাভাবিক বাঁধ।

উদাহরণ : সমভূমিতে গঙ্গার দুই তীরে বা মিশরে নীল নদের দুই তীরে উঁচু স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়। 

6. অশ্বক্ষুরাকৃতি হৃদ:

উৎপত্তি: মধ্যগতির শেষের দিকে এবং নিম্নগতিতে নদীর প্রবাহপথে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের (ox-bow lake) সৃষ্টি হয়। এই সময় নদীর গতিবেগ খুব কম থাকে বলে সামান্য কোনাে বাধা পেলেই নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথকে বলা হয় মিয়েন্ডার। নদী যখন এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয় তখন প্রবাহপথের অন্তঃবাঁকের (উত্তল পাড়) তুলনায় বহিঃবাঁকে (অবতল পাড়) গতিবেগ বেশি থাকে। তাই বহিঃবাঁকে ক্ষয়কার্য চলে, কিন্তু অন্তঃবাঁকে পলি, কাদা ইত্যাদি সঞ্চিত হয়। নদী যখন খুব বেশি এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়, তখন দুই বাঁক বা জলধারার মধ্যবর্তী ভূমি কালক্রমে সম্পূর্ণ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় (বহিঃবাঁকে ক্ষয় প্রক্রিয়ার জন্য)। তার ফলে তখন নদীর ওই দুটি বাঁক বা জলধারার সংযুক্তি ঘটে, অর্থাৎ বাঁকা পথ ছেড়ে নদী তখন সােজা পথে প্রবাহিত হয়। আর পরিত্যক্ত বাকটি হ্রদে পরিণত হয়। এই হ্রদ দেখতে ঘােড়ার খুরের মতাে হয় বলে এর নাম অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। 

উদাহরণ : নিম্নগতিতে গঙ্গা এবং তার শাখানদীগুলির গতিপথে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ দেখা যায়। 

  চিত্র: অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। 

7. বদ্বীপ:

উৎপত্তি: নদীর জলের সঙ্গে বাহিত,পলি, কাদা মােহানার কাছে সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে সহজে জোটবদ্ধ হয়ে মােহানায় বা অগভীর সমুদ্রে জমা হয়। এগুলি ক্রমশ জমে জমে মােহানার কাছে যে নতুন ভূখণ্ডের সৃষ্টি করে, তাকে দ্বীপ বলে। বিভিন্ন নদীতে এইভাবে যেসব দ্বীপ গড়ে ওঠে সেগুলি দেখতে ঠিক মাত্রাহীন বাংলা অক্ষর ‘ব’-এর মতাে অথবা গ্রিক অক্ষর ‘ডেল্টা’ (Δ)র মতাে হওয়ায় এদের বদ্বীপ বলে। উদাহরণ: গঙ্গাব্ৰত্মপুত্র নদীর মােহনায় গড়ে ওঠা বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ।

      চিত্র: বদ্বীপ।

5. হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- হিমবাহের কার্য মূলত তিন প্রকার। যেমন— A. ক্ষয়সাধন; B. বহন; C. সঞ্চয়। হিমবাহের গতি, বরফের গুরুত্ব ও শিলা প্রকৃতির উপর হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ক্ষমতা নির্ভর করে। হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত তিনটি ভূমিরূপ নিয়ে আলােচনা করাে হল— 

1) সার্ক বা করি: পার্বত্য হিমবাহের মস্তক দেশে অর্থাৎ উৎস ক্ষেত্রে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে আরামকেদারার মতাে দেখতে যে ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে বলে সার্ক বা করি। এটি ফ্রান্সে সার্ক, ইংল্যান্ডে করি; জার্মানিতে কার ওয়েলসে ঝুম, স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় বটন, নরওয়ে বন নামে পরিচিত।

গঠন: সার্কের তিনটি অংশ থাকে। 

(i) খাড়া দেওয়াল: এটি হিমবাহের উৎপাটন প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত। 

(ii) বেসিন: মধ্যভাগে অবঘর্ষ ও উৎপাটন প্রক্রিয়া সৃষ্ট শর্ত বেসিন। 

(iii) চৌকাঠ: কম ক্ষয় দ্বারা সৃষ্ট সম্মুখের চৌকাঠের ন্যায় উঁচু অংশ থাকে।

অনুকূল পরিবেশ: i. পর্বতে প্রচুর তুষারপাত; ii. হিমবাহে প্রবাহপথে সমসস্থ শিলার উপস্থিতি; iii. পূর্বের নদী উপত্যকার উপস্থিতি।

উদাহরণ: অ্যান্টার্কটিকা ওয়ালকট নামক সার্ক।

        চিত্র: সার্ক বা করি

2) ‘U’ আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণী: পার্বত্য অঞ্চলে পূর্বেকার নদী উপত্যকাগুলি হিমবাহের ঘর্ষণে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে U আকৃতি প্রাপ্ত হলে যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে বলে হিমদ্রোণী। 

গঠন: অনেক সময় U আকৃতির উপত্যকায় শিলাস্তরের অসমান ক্ষয়ের ফলে গঠিত হয় হিমসােপান। এর তিনটি অংশ থাকে। i. রাইজার; ii. রিগ্যাল; ii. ট্রেড।

বৈশিষ্ট্য: (i) অনেক সময় এইরকম গভীর উপত্যকায় হিমবাহ গলাজল জমে হ্রদ তৈরি হয়। 

(ii) হিমদ্ৰোণীতে হিমসােপান দেখা যায়। 

উদাহরণ: আমেরিকার ইয়ােসেমিতি উপত্যকা। 

3) ঝুলন্ত উপত্যকা: অনেক সময় একটি বৃহৎ প্রধান হিমবাহের সঙ্গে কয়েকটি ছােটো ছােটো উপ-হিমবাহ এসে মিলিত হয়। এরূপ স্থলে প্রধান হিমবাহ সরে গেলে উপ-হিমবাহগুলি উপত্যকা প্রধান হিমবাহের উপর ঝুলন্ত অবস্থায় আছে বলে মনে হয়, একে ঝুলন্ত উপত্যকা বলে। 

বৈশিষ্ট্য: (i) উপ-হিমবাহগুলি প্রধান হিমবাহ উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে।

(ii) ঝুলন্ত উপত্যকায় জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়।

উদাহরণ: (i) বদ্রীনাথের নিকট ঋষিগঙ্গা।

(ii) হিমালয় পর্বতের পর পর্বতের থেকে নিচের দিকে কুবের নামে ঝুলন্ত উপত্যকা।

6. হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : হিমবাহের সঞয়কার্যকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা— [1] পর্বতের উপরিভাগে সঞয় এবং [2] পর্বতের পাদদেশে সঞ্চয় বা হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞয়। এর ফলে বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ গঠিত হয়। যেমন—

1. পর্বতের উপরিভাগে সঞ্চয় :

(i) গ্রাবরেখা: উৎপত্তি: পার্বত্য উপত্যকা দিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষয়জাত পদার্থগুলি ওই হিমবাহের সঙ্গে বাহিত হয়ে উপত্যকার বিভিন্ন অংশে সঞ্চিত হয়। সঞ্চিত এইসব পদার্থ গ্রাবরেখা বা মােরেন নামে পরিচিত।

শ্রেণিবিভাগ: অবস্থানের পার্থক্য অনুসারে বিভিন্ন প্রকার গ্রাবরেখা দেখতে পাওয়া যায়, যেমন—

[a] পার্শ্ব গ্রাবরেখা: হিমবাহের প্রবাহপথের দু-পাশে হিমবাহের সাথে বাহিত পদার্থসমূহ সঞ্চিত হলে তাকে বলে পার্শ্ব গ্রাবরেখা।

[b] প্রান্ত গ্রাবরেখা: হিমবাহের প্রবাহপথের শেষপ্রান্তে ওইসব পদার্থ সঞ্চিত হলে, তাকে বলে প্রান্ত গ্রাবরেখা।

[c] মধ্য গ্রাবরেখা: দুটি হিমবাহ পাশাপাশি মিলিত হলে মাঝখানে সৃষ্টি হয় মধ্য গ্রাবরেখা।

[d] ভূমি গ্রাবরেখা: হিমবাহের তলদেশে গ্রাবরেখা সঞ্চিত হলে তাকে ভূমি গ্রাবরেখা বলে। আকৃতি ও প্রকৃতি অনুসারে গ্রাবরেখা চার ভাগে বিভক্ত, যেমন—

[a] অবিন্যস্ত গ্রাবরেখা: হিমবাহের সামনে ইতস্তত বা বিক্ষিপ্তভাবে গ্রাবরেখা গড়ে উঠলে অবিন্যস্ত গ্রাবরেখার সৃষ্টি হয়।

[b] বলয়ধর্মী গ্রাবরেখা: গ্রাবরেখা বলয়াকারে সৃষ্টি হলে তাকে বলয়ধর্মী গ্রাবরেখা বলে।

[c] রােজেন গ্রাবরেখা: একটির ওপর একটি গ্রাবরেখা থাকলে রােজেন গ্রাবরেখার সৃষ্টি হয়।

[d] স্তরায়িত গ্রাবরেখা : হিমবাহ দ্বারা বাহিত পদার্থ সমুদ্র তলদেশে সঞ্চিত হলে স্তরায়িত গ্রাবরেখার সৃষ্টি হয়।

উদাহরণ: পূর্ব হিমালয়ে জেমু হিমবাহের শেষ প্রান্তে তিস্তা নদীর উচ্চ অববাহিকায় বিভিন্ন গ্রাবরেখা আছে।

(ii) আগামুক বা ইরাটিক: হিমবাহের সঙ্গে বহুদূর থেকে বিভিন্ন আকৃতির। শিলাখণ্ড বাহিত হয়ে এসে কোনাে স্থানে সঞ্চিত হলে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে, তা আগামুক বা ইরাটিক নামে পরিচিত l

বৈশিষ্ট্য: [a] আগামুক হিমবাহের সঞয় কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ। [b] এর শিলাধর্মের সঙ্গে স্থানীয় শিলাধর্মের কোনাে মিল থাকে না। [c] এগুলি কঠিন শিলায় গঠিত হয়।

উদাহরণ: কাশ্মীরের পহেলগামের উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে আগামুক দেখতে পাওয়া যায়। 

2. পর্বতের পাদদেশে সঞ্চয় বা হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে গঠিত ভূমিরূপ: পর্বতের পাদদেশে হিমবাহের প্রান্তসীমায় (অর্থাৎ হিমরেখার নীচে) হিমবাহ ও হিমবাহগলিত জলধারা মিলিতভাবে কিছু ভূমিরূপ গঠন করে, যেমন— (i) বহিঃধৌত সমভূমি: উৎপত্তি: প্রান্ত গ্রাবরেখার শেষে বরফগলা জলপ্রবাহের মাধ্যমে হিমবাহবাহিত নুড়ি, কাকর, বালি প্রভৃতি বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে সঞ্চিত হলে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বলে বহিঃধৌত সমভূমি বা আউট-ওয়াশ প্লেন।

বৈশিষ্ট্য: [a] বহিঃধৌত সমভূমি হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ। [b] বহিঃধৌত সমভূমিতে অনেকসময় কোনাে গর্তে হিমবাহগলা জল জমে হ্রদের সৃষ্টি হয়।

উদাহরণ: উত্তর আমেরিকার কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ হ্রদ অঞ্চলে এরূপ সমভূমি দেখা যায়। 

(ii) ড্রামলিন: উৎপত্তি: বহিঃধৌত সমভূমিতে বা তার কাছে হিমবাহ ও জলধারাবাহিত প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি, কাকর, বালি প্রভৃতি এমনভাবে টিলার মতাে সঞ্চিত হয় যে, সেগুলিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন উলটানাে নৌকা বা চামচ উলটানাে অবস্থায় আছে। এই ধরনের ভূমিরূপগুলি ড্রামলিন নামে পরিচিত। যেসব জায়গায় একসঙ্গে অনেক ড্রামলিন অবস্থান করে সেই জায়গাকে দূর থেকে ডিম ভরতি ঝুড়ির মতাে দেখতে লাগে। এজন্য ড্রামলিন অধ্যুষিত অঞ্চলকে ডিমের ঝুড়ি ভূমিরূপ (Basket of Eggs Topography) বলা হয়।

উদাহরণ: আয়াল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে এই ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়।

বৈশিষ্ট্য: [a] ড্রামলিন হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ।

[b] এগুলির উচ্চতা 6 মি থেকে 60 মি হয়।

[c] এগুলি হিমবাহপ্রবাহের দিকে। অমসৃণ ও খাড়াই এবং বিপরীত দিকে মসৃণ ও ঢালু হয়। উদাহরণ:  সুইটজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতে এই ধরনের ভূভাগ দেখা যায়। 

(iii)কেম: উৎপত্তি: হিমবাহের শেষপ্রান্তে হিমবাহবাহিত শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাকর, বালি, কাদা প্রভৃতি পদার্থকে যখন হিমবাহগলিত জলধারা বহন করে নিয়ে গিয়ে কোনাে বড়াে জলাভূমি বা হ্রদে সঞ্চয় করে ত্রিকোণাকার বা বদ্বীপের মতাে ভূমিরূপ গড়ে তােলে, তখন তাকে বলা হয় কেম।

বৈশিষ্ট্য: [a] কেম হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে গড়ে ওঠা একটি ভূমিরূপ।

[b] হিমবাহ উপত্যকার দু-পাশে কেম সৃষ্টি হলে তাকে কেম মঞ্চ বলে।

উদাহরণ: ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের নরফেকেন গ্লাভেন উপত্যকায় কেম ও কেম সােপান আছে। 

(iv) এসকার: উৎপত্তি: অনেক সময় হিমবাহবাহিত প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি, কাকর, বালি প্রভৃতি হিমবাহগলিত জলধারার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে পর্বতের পাদদেশে আকাবাকা শৈলশিরার মতাে ভূমিরপ গঠন করে। একে এসকার বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য: [a] এসকারগুলির উচ্চতা প্রায় 3 থেকে 5 মিটার হয়।

[b] এগুলি আঁকাবাঁকা ও সংকীর্ণ হয় এবং দৈর্ঘ্যে কয়েক কিলােমিটার পর্যন্ত হয়।

উদাহরণ: ফিনল্যান্ডের পুনকাহারয়ু এসকারের উল্লেখযােগ্য উদাহরণ।

(v) কেটল: উৎপত্তি: কোনাে কোনাে সময় বহিঃধৌত সমভূমিতে বিরাট বিরাট বরফের চাই নানা ধরনের অবক্ষেপের মধ্যে চাপা পড়ে থাকে। পরে যখন ওই বরফ গলে যায়, তখন সেখানে বেশ বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তগুলিই কেটল নামে পরিচিত। পরবর্তীকালে ওইসব গর্তে হিমবাহ গলিত জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় তাকে বলে কেটল হ্রদ।

উদাহরণ: স্কটল্যান্ডের উত্তরে ওকনি  দ্বীপে কে এবং কেটল হ্রদ আছে।

(vi) নব: উৎপত্তি: হিমবাহবাহিত পাথর, নুড়ি, কাকর প্রভৃতি হিমবাহ গলিত জলধারার মাধ্যমে বহিঃধৌত সমভূমির ওপর ছােটো ছােটো টিলার আকারে সঞ্চিত হলে সেই টিলাগুলিকে নব বলে।

উদাহরণ: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হ্রদ অঞ্চলে বহু নব আছে।

7. হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের চিত্রসহ বিবরণ দাও। 

Ans:- হিমবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলি হলাে—

1. বহিঃবিধৌত সমভূমি : হিমবাহ গলিত জল  যখন গ্রাবরেখার প্রান্তভাগ দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে নীচের দিকে প্রবাহিত হয়, তখন হিমবাহ গলিত জলের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বালুকারাশি ও কর্দমকণা গ্রাবরেখার প্রান্তভাগে সঞ্চিত হয়ে যে বিশাল সমতলভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলে।

2. ড্রামলিন : বহিঃবিধৌত সমভূমির উপর হিমবাহ দ্বারা বাহিত নুড়ি, বালি, কাদা, পলি প্রভৃতি সঞ্জিত হয়ে উল্টানাে নৌকা বা চামচের মতাে যে ভূমিরুপ তৈরি হয়, তাকে ড্রামলিন বলে।

3. কেম ও এস্কার : হিমবাহ বাহিত নুড়ি, বালি, কাদা, পলি প্রভৃতি জমা হয়ে যে ত্রিকোণাকার দ্বীপের ন্যায় যে ভূমিরুপ গঠন করে তাকে কেম বলে। হিমবাহের তলদেশে নুড়ি, বালি, পলি, কাদা প্রভৃতি জমা হয়ে গঠিত হওয়া আকাবাঁকা সংকীর্ণ শৈলশিরাকে বলা হয় এস্কার।

4. কেটল ও কেটল হ্রদ : বহিঃবিধৌত সমভূমিতে অনেক সময় বরফের টুকরাে থেকে যায়। পরবর্তীতে সেই বরফের টুকরােগুলি গলে গেলে অঞ্চলটি গর্তরূপে অবস্থান করে। এ জাতীয় গর্তকে বলা হয় কেটল। আবার কেটলগুলি জলপূর্ণ হয়ে যে হ্রদের সৃষ্টি করে, তাকে বলা হয় কেটল হ্রদ।

৪. বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূণের চিত্রসহ বিবরণ দাও।

Ans:- শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলাধারের মিলিত কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত খুব কম হয়। তবে যখন বৃষ্টিপাত হয়, একেবারে মুশলধারেই তার আবির্ভাব ঘটে। আর বৃষ্টিপাতের সেই জল ভূপৃষ্ঠের ঢাল বরাবর নেমে কিছু অনিত্যবহ জলধারাও সৃষ্টি করে। এজন্য মরু অঞলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে কিছু ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, যেমন —

1. ওয়াদি : উৎপত্তি: আরবি শব্দ ‘ওয়াদি’র অর্থ শুষ্ক উপত্যকা। মর অঞলের বালি ঢাকা ভূমিতে জল নিকাশের জন্য নদীনালা বিশেষ থাকে না বলে এক পশলা মুশলধারে বৃষ্টি হলেই বন্যা হয়ে যায়। বন্যা বা বৃষ্টির জল বেরােনাের জন্য তখন বালুকাভূমির ওপর অস্থায়ী নদী সৃষ্টি হয়। জল নেমে গেলে ওগুলি শুষ্ক খাত হিসেবে পড়ে থাকে। এই শুষ্ক নদীখাত-ই ওয়াদি নামে পরিচিত।

2. পেডিমেন্ট : উৎপত্তি: বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত ক্ষয়কার্যে উচ্চভূমি বা ইনসেলবার্জের পাদদেশে যে প্রায় সমতল মৃদু ঢালবিশিষ্ট ভূমিভাগের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে পেডিমেন্ট।

বৈশিষ্ট্য: [i] এর ঢাল গড়ে 1 (এক) থেকে 10°-এর মধ্যে থাকে। [ii] পেডিমেন্টের ওপর ছােটো ছােটো শিলাখণ্ড, বালি, পলি ইত্যাদি থাকতে পারে। [iii] পেডিমেন্ট সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হতে পারে। [iv] পেডিমেন্টের নীচে থাকে বাজাদা।

উদাহরণ: উত্তর আফ্রিকার অ্যাটলাস পর্বতের পাদদেশের কোনাে কোনাে অংশে বিস্তৃত পেডিমেন্ট আছে।

3. বাজাদা: উৎপত্তি: পেডিমেন্টের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জলধারার সঙ্গে আসা নুড়ি, কাকর, পলি, বালি প্রভৃতি ঢালের নিম্নাংশে অর্থাৎ পেডিমেন্টের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণাকার পলল ব্যজনী সৃষ্টি করে। এই ধরনের অনেকগুলি ভূমি পরস্পর যুক্ত হলে যে বড়াে আকারের পললভূমি গঠিত হয় তাকে বলে বাজাদা বা বাহাদা।

বৈশিষ্ট্য: [i] পেডিমেন্টের সামনে গড়ে ওঠা বাজাদা সম্পূর্ণরূপে সঞ্জয়জাত ভূমিরূপ। [ii] পেডিমেন্টের দিকে বাজাদার খাড়া অবতল ঢাল সৃষ্টি হলেও প্লায়ার কাছে ঢাল খুব কম বা একেবারে শূন্যও হতে পারে।

উদাহরণ: সাহারা মরুভূমি-সহ প্রায় সব মরুভূমিতেই বাজাদা আছে।

4. প্লায়া: উৎপত্তি: চারপাশের উচ্চভূমি থেকে আসা অনেকগুলি জলধারা মধ্যভাগের উপত্যকা বা নিম্নভূমিতে মিলিত হলে সেখানে লবণাক্ত জলের অগভীর হ্রদ সৃষ্টি হয়। বাজাদা পৃষ্ঠের ওপর গড়ে ওঠা এই মরুদের নাম প্লায়া। এগুলি সাধারণত অস্থায়ী প্রকৃতির হয় এবং এদের আয়তন বা ক্ষেত্রমান কয়েক বর্গমিটার থেকে কয়েক বর্গকিলােমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মরু অঞলে ক্ষয়কার্যের নিম্নসীমা বা শেষসীমা হল এই প্লায়া।

ভূমিরূপ

9. মরুভূমি প্রতিরোধের উপাদানগুলি কী কী?

Ans:- মরুভূমির আয়তন বৃদ্ধিকেই মরুকরণ বা মরু সম্প্রসারন বলে। জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের অবিবেচনা ক্রিয়া-কলাপ প্রভৃতি কারনে পৃথিবীতে মরুভূমির আয়তন ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

মরুভূমির সম্প্রসারণ এর কারন:-

(1) অরণ্য নিধন :- বর্ধিত জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নগরায়ন । বোনকে কেটে বসতি গড়ে উঠছে। অরণ্যবিনাশ এর ফলে মাটি আলগা হয়ে পড়ায় ভূমিক্ষয় বাড়ছ। ভারতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় 15 লক্ষ হেক্টর অরণ্য বিনষ্ট হয়। ফলে মোট ভূমি ভাগের 1% ভূমি পরিণত হয় বন্ধ্যাভূমিতে।

(2) ভূমি ব্যবহার :- ভূমি ব্যবহার বলতে মূলত নানা উদ্দেশ্য পূরণের জন্য , কখনো অর্থনৈতিকভাবে কখনো বা সামাজিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমির কার্যকারিতাকে বোঝায় । ভারতের মরু অঞ্চল পৃথিবীর সব মরুভূমির মধ্যে সর্বাধিক জনবহুল। কৃষিকার্যে যেখানে লাভজনক অর্থনৈতিক ক্রিয়া-কলাপ সেখানে অতিরিক্ত কৃষিকার্যে মাটির কণাগুলি শিথিল হয়ে ভূমিক্ষয় বাড়ায়।

(3) অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ :- শুষ্ক পরিবেশে অল্প জলের মাধ্যমে যদি তৃণভূমি সৃষ্টি করা যায় তাহলে সেখানে পশুচারণভূমি গড়ে ওঠে যা জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু অতিরিক্ত পশুচারণ ভূমিক্ষয় বাড়ায়। পশুর খুরের আঘাতে মাটি আলগা হয় গাছপালার আচ্ছাদন বিনষ্ট হয়।

(4) ভৌম জলের অতিব্যবহার :- জল সেচের মাধ্যমে শুষ্ক ভূমি কৃষি যোগ্য করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভৌম জল তুলে নেওয়া হয় । ফলে জলের সাথে কৌশিক প্রক্রিয়ায় লবণ ও উঠে আসে যা কৃষি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে । তার সাথে জলের স্তর নেমে যাওয়ায় মরুভূমির মাটির আর্দ্রতা হারিয়ে মরুকরণ পদ্ধতিকে ত্বরান্বিত করে।

মরুভূমির সম্প্রসারণ রোধের উপায় :-

মরুভূমি সম্প্রসারণের জন্য দায়ী কারণগুলি কে নিয়ন্ত্রণ করা যদি সম্ভব হয় তাহলে মরু সম্প্রসারণ রোধ করা যাবে । মরু আগ্রাসন থেকে পৃথিবী কে রক্ষা করার জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করা একান্ত আবশ্যক।

(1) বৃক্ষরোপণ :- গাছপালা ধুলোর ঝড় কে আটকায় ভূমিক্ষয় রোধ করে। মরুভূমিতে গাছ লাগালে প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রাচীর গড়ে তোলা যায় ।বালিয়াড়ির প্রসারণ এর দিকে আড়াআড়ি ভাবে গাছ লাগাতে হবে যাতে বায়ুর ক্ষয় রোধ করা যায়।

(2) তৃণভূমি সৃষ্টি :- মরুভূমিতে মাটির আর্দ্রতা সংরক্ষণ করে নিচু জমিতে জল ধরে রেখে জাতীয় গাছ লাগাতে হবে ।এই প্রক্রিয়ায় পশুচারণভূমি যেমন গড়ে তোলা যাবে সেই সঙ্গে মাটির সিক্ত তা রক্ষা করা যাবে।

(3) জলসেচ প্রকল্প:- মরুভূমির মাটিতে খনিজ মৌল উপস্থিত থাকে। জলসেচের ব্যবহার করা গেলে মাটির উর্বরতা বাড়ে কৃষি কাজ করা যায় ফলে মরুভূমি শস্য-শ্যামলা হবে ও করণ বাধা পাবে।

(4) পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ :- অতিরিক্ত পশুচারণ কে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে পশুর ক্ষুর এর দ্বারা ভূমিক্ষয় রোধ করা যাবে এবং মরুভূমির সম্প্রসারণ আটকানো যাবে।

(5) কৃত্রিম ভাবে জলাধার নির্মাণ :- মরু অঞ্চলে কৃত্রিমভাবে জলাধার নির্মাণ করলে আশেপাশের জমি শুষ্কতা থেকে রক্ষা করা যাবে এবং দূরবর্তী অঞ্চলে ক্যানেলের মাধ্যমে জল সেচের ব্যবস্থা করলে মরু অঞ্চলের কৃষি কাজ করা যাবে ও মরু সম্প্রসারনে ও আটকানো যাবে।

10. সুন্দরবন অঞ্চলের লোহাচড়া, নিউমুর এবং ঘোড়ামারা দ্বীপ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

Ans:- লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপের বর্তমান অবস্থা : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবন অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের জলতলের উচ্চতা প্রায় ৩.১৪ মিমি. বৃদ্ধি পেয়েছে । উপকূল অঞ্চলের ক্ষয়, জোয়ারের প্রাবল্য ও সাইক্লোনের প্রভাবে এই অঞ্চলের দ্বীপগুলি ক্রমশ সমুদ্রজলে নিমজ্জিত হচ্ছে । যেমন—

লোহাচড়া দ্বীপ : হুগলি নদীর মোহনায় বেডফোর্ড দ্বীপের উত্তরে অবস্থিত লোহাচড়া দ্বীপটি জোয়ারের প্রাবল্যে ১৯৮০ সালে স্থায়ীভাবে প্লাবিত হয় এবং ২০০৬ সালে সম্পূর্ণরূপে সমুদ্রজলে নিমজ্জিত হয় । পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ২০০৯ সালে দ্বীপটিকে পুনরায় জেগে উঠতে দেখা যায় । তবে বছরের অর্ধেক সময় দ্বীপটি জলমগ্ন থাকে ।

নিউমুর দ্বীপ : ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর মোহানা থেকে ২ কিমি. দূরে অবস্থিত দক্ষিণ তালপাতির নিউমুর দ্বীপটি ১৯৭০ সালে ‘ভোলা’ ঘূর্ণিঝড়ে জলমগ্ন হয় । ১৯৫১ সালে দ্বীপটির আয়তন ছিল প্রায় ৪০.১১ বর্গকিমি. । ২০১০ সালের পর সমুদ্রজলে প্রায় নিমজ্জিত হওয়ায় বর্তমানে দ্বীপটির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন ।

ঘোড়ামারা দ্বীপ : কলকাতা থেকে ১৫০ কিমি. দক্ষিণে হুগলি নদীর মোহানায় সাগর দ্বীপের উত্তরে অবস্থিত ঘোড়ামারা দ্বীপটি বর্তমানে ক্রমশ জলে নিমজ্জিত হচ্ছে । এই দ্বীপটির খাসিমারা, লক্ষ্মীনারায়ণপুর প্রভৃতি জনবহুল গ্রাম ইতিমধ্যেই জলমগ্ন হয়েছে । হাটখোলা, মন্দিরতলা, চুনপুরী প্রভৃতি গ্রামগুলিও আগামী দিনে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । ১৯৫১ সালে এই দ্বীপের আয়তন ছিল প্রায় ৩৮.২৩ বর্গকিমি. । সমুদ্র জলতল বৃদ্ধি ও জোয়ারের প্রাবল্যে ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ২০১১ সালে এই দ্বীপের আয়তন কমে হয়েছে মাত্র ৪.৩৭ বর্গ কিমি. ।

Join Our Group

Join Telegram