10 টি শিক্ষামূলক গল্প ও ঘটনা। নতুন শিক্ষামূলক গল্প । শিক্ষণীয় বাংলা গল্প

Last Updated:

শিক্ষামূলক গল্প: আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি 10 টি সেরা শিক্ষনীয় গল্প, Top10 inspirational motivational story in bengali,যা আপনাকে শিক্ষা বা অনুপ্রেরণা বা মোটিভেশন জোগাতে সাহায্য করবে।

তাই দেড়ি না করে দেখে নেওয়া আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ কিছু নতুন শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল গল্প, নতুন শিক্ষনীয় গল্প এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে বিশ্বের সেরা মোটিভেশনাল গল্প,সফলতার গল্প ,শিক্ষামূলক গল্প,Success Motivational story,Inspirational story in bengali, পাওয়ার এবং পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট westbengaltoday.in ভিজিট করুন।

10 টি শিক্ষামূলক গল্প ও ঘটনা।|নতুন শিক্ষামূলক গল্প |শিক্ষণীয় বাংলা গল্প।
10 টি নতুন শিক্ষামূলক গল্প ও ঘটনা

 

ছোট শিক্ষামূলক গল্প -ছোট শিক্ষণীয় গল্প। বাংলা নীতিকথার গল্প। – 01

একবার দুই বন্ধু রাজু এবং সাজু গ্রাম থেকে দূরে খেলতে এসেছে। রাজুরর বয়স ৫ এবং সাজুর বয়স ৭ বছর। তারা একটি পুরোনো কূপের পাশে খেলছিল। এমন সময় সাত বছর বয়সী সাজু খেলতে খেলতে কূপে পরে যায়। এবং পাচ বছর বয়সী রাজু তাকে কূপ থেকে পানি ওঠানোর জন্য যে বালতি এবং রশি ব্যাবহার করা হয় সেটি দিয়ে টেনে তোলার চেষ্টা করছে। কূপে পরে যাওয়া বয়সে বড় ছেলেটি ওজনেও রাজুর চেয়ে বেশি ছিল। ওরা যেহেতু গ্রাম থেকে অনেক দূরে চলে এসেছিল তাই সাহায্য করার জন্যও কেউ ছিল না আসে-পাশে। তাই বয়সে ছোট ছেলেটি তার বন্ধুর কান্না দেখে নিজের শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে রশিটি টানতে শুরু করলো।

সে তার মনের এবং দেহের পূর্ণ ইচ্ছা শক্তি যেন রশিতে কেন্দ্রীভুত করে ফেলেছে। তার সুধু একটাই চিন্তা এই রশি টেনে তার বন্ধুকে তুলতে হবে না হলে তার বন্ধু মারা যাবে। ছেলেটি কিছুক্ষন পর বন্ধুকে উপরে তুলে আনলো । তারা দুজনেই গ্রামে এসে সবাইকে এ ঘটনা বলতে লাগলো। কিন্তু গ্রামের সবাই তাদের কথা অবিশ্বাস করলো। বললো অনেক দুষ্টুমি হয়েছে আর মিথ্যে বলতে হবেনা। “সে তোমার ওজনে প্রায় দ্বিগুণ তুমি তাকে কিভাবে টেনে তুলবে?” তারা সবাইকে বললো এটা মিথ্যা নয়। শুধু গ্রামের একজন বৃদ্ধ তাদের কথায় বিশ্বাস করলো।

জ্ঞানী হিসেবে তার অনেক পরিচিতি আছে, সবাই যখন শুনলো যে সেই বৃদ্ধ বলেছে ঘটনা সত্য তাহলে জেনে আসা যাক, কি কারনে তিনি এটা বললেন। তখন বৃদ্ধ সবাইকে বললো, মানুষের বিপদে যখন অন্য কোথাও থেকে সাহায্যের আশা থাকেনা এবং দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন মানুষ তার সাধ্যের বাইরে গিয়েও চেষ্টা করতে পারে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফলাত পায়।

ছোট শিক্ষামূলক গল্প -ছোট শিক্ষণীয় গল্প। বাংলা নীতিকথার গল্প। – 02


এক রাজার এক চাকর ছিল। চাকরটা সবসময় যেকোন অবস্থাতেই রাজাকে বলত, “রাজা মশাই, কখনো মন খারাপ করবেন না। কেননা আল্লাহ যা করেন তার সবকিছুই নিখুঁত ও সঠিক।” একবার রাজা সেই চাকর সহ শিকারে যেয়ে নিজেরাই এক হিংস্র প্রাণীর আক্রমণের শিকার হলো। রাজার চাকর সেই প্রাণীকে মারতে পারলেও, ততক্ষণে রাজা তার একটা আঙুল হারান। রাগে- যন্ত্রণায়-ক্ষোভে রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে চাকরের উদ্দেশ্য করে বলেন “আল্লাহ যদি ভালোই হবেন তাহলে আজকে শিকারে এসে আমার আঙুল হারাতে হতো না।” চাকর বলল, “এতকিছুর পরও আমি শুধু আপনাকে এটাই বলব আল্লাহ সবসময়ই ভালো ও সঠিক কাজই করেন; কোনো ভুল করেন না।চাকরের এই কথায় আরও বিরক্ত হয়ে রাজা তাকে জেলে পাঠানোর হুকুম দিলেন। এরপর একদিন রাজা আবার শিকারে বের হলেন।

এবার তিনি একদল বন্য মানুষের হাতে বন্দি হলেন। এরা তাদের দেবদেবির উদ্দেশ্যে মানুষকে বলি দিত। রাজা কে বলি দিতে যেয়ে তারা দেখল যে, রাজার একটা আঙুল নেই। তারা এমন বিকলাঙ্গ কাউকে তাদের দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে রাজি হলো না। তাই তারা রাজাকে ছেড়ে দিল।প্রাসাদে ফিরে এসে তিনি তার সেই পুরোনো চাকরকে মুক্ত করে দেওয়ার হুকুম দিলেন। চাকরকে এনে বললেন, আল্লাহ আসলেই ভালো ৷ আমি আজ প্রমাণ পেয়েছি তার, আমি আজ প্রায় মরতেই বসেছিলাম। কিন্তু আঙুল না থাকার কারণে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছি।

“তবে আমার একটা প্রশ্ন আছে। আল্লাহ ভালো, এটা তো বুঝলাম। কিন্তু তাহলে তিনি আমাকে দিয়ে তোমাকে জেলে পুরলেন কেন?” চাকর বলল, “রাজামশাই, আমি যদি আজ আপনার সাথে থাকতাম, তাহলে আপনার বদলে আজ আমি কোরবান হয়ে যেতাম।আপনার আঙুল ছিল না, কিন্তু আমার তো ছিল। কাজেই আল্লাহ যা করেন সেটাই সঠিক, তিনি কখনো কোনো ভুল করেন না। গল্পের শিক্ষাঃ- সব কিছুর ইতিবাচক, নেতিবাচক দুই দিক থাকে। কখনো নিরাশ হবেন না, যদি কোন কিছুতে সফলতা না পান তবে ইতিবাচক চিন্তা করুন। সফল না হওয়ার কারণে কি ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে না ভেবে কি লাভ হয়েছে তা দেখুন।

 

শিক্ষণীয় মোটিভেশনাল গল্প -ছোট শিক্ষামূলক গল্প -ছোট শিক্ষণীয় গল্প।-3


এক দেশের এক রাজা ছিল খুবই কঠোর প্রকৃতির।তার রাজকার্য পরিচালনার জন্য নিয়োজিত ছিল অগনিত রাজ-কর্মচারী।এতোগুলো কর্মচারীর ভিতর তার কোনো কর্মচারী যদি তার রাজকার্য করতে গিয়ে কোনো ভুল করতো, তাহলে তিনি তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতেন।তার কাছে ভুলের কোনো হ্মমা নেই। রাজার এক বিশ্বস্ত কর্মচারী প্রায় ১০ বছর ধরে তার রাজকর্ম পালনের জন্য নিয়োজিত ছিল।একদা তার এ বিশ্বস্ত কর্মচারী তার আদেশ পালনে ভুল করে বসলো।কর্মচারী তার ভুলের জন্য রাজার কাছে খুবই আকুতি করলো।কিন্তু রাজার কাছে তো ভুলের কোনো হ্মমা নেই। ফলস্বরুপ রাজা তার দেহকে কুকুর দিয়ে ভহ্মন করানোর জন্য প্রহরীদেরকে আদেশ করলো।কর্মচারীকে হত্যা করার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলো।

কর্মচারী যখন দেখলো যে, তার আর রহ্মা নেই,তখন সে রাজার কাছে শুধু তার একটি ইচ্ছা পূরন করার জন্য ফরিয়াদ জানালো। ফরিয়াদটি হলো যে, হুজুর আমাকে মাত্র ১০দিন সময় দিন,আমি এই ১০ দিন কুকুরগুলোকে মনের মতো পেট পুরে খাওয়াবো।তখন রাজা তার এ কথা শুনে বললো যে,যেহেতু তুমি আমার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিলে তাই তোমাকে এই ১০ দিন সময় দেয়া হলো।কিন্তু মনে রেখ মাত্র ১০ দিন। এই ১০ দিন ঐ কর্মচারী কুকুরগুলোকে খুব আদর যত্ন করে খাওয়ালো।১০ দিন সময় শেষ হয়ে গেল! তাই রাজার সেই আদেশ পালনের জন্য প্রহরীরা নিয়মানুযায়ী ওই আগ্রাসী কুকুর গুলোর কাছে ওই কর্মচারীকে নিহ্মেপ করলো।কিন্তু দেখেন কুকুরগুলো দৌরে এসে ওই কর্মচারীর হাত -পা চাটা শুরু করলো।

এ অবস্থা দেখে তো রাজা হতবাক! মাথা গরম, এ কি ব্যাপার! কি হলো কুকুরগুলোর? প্রহরীরা শত চেষ্টা করেও কুকুরগুলোকে রাগাতে ব্যর্থ হন।কিছুহ্মনপর ওই কর্মচারী উঠে দাড়িয়ে রাজাকে বললো যে,হুজুর ১০ বছর আপনার সেবা করে আমি কি পেলাম?কিছুই পেলাম না।মাত্র ১ দিনের ভুলের প্রতিদান পেলাম মৃত্যুদন্ড। আপনার কাছে আমার কোনো মূল্যেই নেই।কিন্তু দেখেন মাত্র ১০ দিনের সেবা-শুশ্রুশা পেয়ে কুকুরগুলো আমাকে কিভাবে সম্মান দিচ্ছে, প্রতিদান দিচ্ছে।আমার সাথে কুকুরগুলো বিশ্বাস ঘাতগতা করে নি।

আপনার প্রহরীরা শত চেষ্টা করেও কুকুরগুলোকে রাগাতে ব্যর্থ হন। এ কথা শুনে রাজার মনে অনুশোচনা জাগ্রত হলো।সে মনে মনে ভাবলো মাত্র ১০ দিনের সেবা পেয়েই কুকুরগুলো তার মনিবকে কত সম্মান করছে।তার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে নি। কিন্তু আমি এটা কি করতে চেয়েছি?যে কর্মচারী প্রায় ১০ বছর আমার হুকুম তামিল করতো,সেবা-শুশ্রুশা করতো তাকেই আমি………….কথাগুলো ভেবে রাজা মনে মনে লজ্জ্বাবোধ করলো। ফলস্বরুপ রাজা তার কর্মচারীকে মাফ করে দিল।সে তার ভুল বুঝতে পেরে কর্মচারীকে বুকে টেনে নিল।

 

নতুন শিক্ষামূলক গল্প – ছোট শিক্ষামূলক গল্প -ছোট শিক্ষণীয় গল্প। বাংলা নীতিকথার গল্প। – 04


এক মহিলা একটি অজগর সাপ পুষতেন। একদিন হঠাৎ করে সাপটি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিল। শুধু বিছানায় মহিলার গা ঘেঁসে শুয়ে থাকে।কোন কিছুতেই কিছু খায় না।অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর মহিলা সাপকে নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তার প্রশ্ন করলেন সাপ কি আশেপাশে থাকে যখন আপনি ঘুমাতে যান ? উত্তরে মহিলা বলল ‘হ্যা’।তখন ডাক্তার বলল “দেখুন আসলে আপনার সাপের কোন রোগ হয়নি,ও নিজেকে যাচাই বাছাই করে আপনাকে খেয়ে হজম করার প্রাক্টিস করছে।এজন্যই আপনি ঘুমালে বার বার আপনার গা ঘেঁসে আপনাকে মেপে মেপে পরীক্ষা করে নিজেকে অভূক্ত রাখছে।সঠিক সময়ে ও আপনাকে গিলে ফেলবে” মোরাল :- কেউ আপনার সাথে একই রুমে থাকলে বা হাসলে মনে করবেন না যে সে আপনার বন্ধু !

 

২০ টি শিক্ষামূলক মোটিভেশনাল গল্প |শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল গল্প |Educational motivational story in bengali

 

ছোট শিক্ষামূলক গল্প -ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 05


গল্পটি অনেকদিন আগের আমেরিকার এক বিকেলের, যখন আইসক্রিম স্যান্ডির দাম অনেক কম ছিল। একটি ১০ বছরের ছেলে একটি হোটেলের আইসক্রিম কর্ণারে ঢুকে একটি টেবিলে বসল। একজন ওয়েটার তার কাছে অর্ডার নিতে আসলো। ছেলেটি তার কাছে জানতে চাইলো- “একটি আইসক্রিম স্যান্ডির দাম কত?” ওয়েটার উত্তর দিল, “৫০ সেন্ট,”। ছোট ছেলেটি তার পকেট থেকে কতগুলো কয়েন বের করে গুনতে শুরু করলো। তারপর জিজ্ঞাসা করলো, “একটি সাধারণ আইসক্রিমের দাম কত?” হোটেলে আসা কিছু গেস্ট তখন টেবিলের জন্য অপেক্ষা করছিল এবং একারনে ওয়েটার কিছুটা তারাহুড়ো করছিল,কারন তাদের থেকে যত্নের সাথে অর্ডার নিলে সে হয়তো কিছু টিপ পেতে পারে। সে বিরক্তিরস্বরে বলল- “৩৫ সেন্ট”।

ছোট ছেলেটি আবার কয়েনগুলো গুনে নিল। এবং বললো “আমি সাধারণ আইসক্রিমই নেব”। ওয়েটার আইসক্রিম নিয়ে এল, এবং টেবিলে বিলটা রেখে তাকে কিছু না বলেই চলে গেল। ছেলেটি আইসক্রিমটি খেয়ে, ক্যাশিয়ারকে টাকা দিয়ে চলে গেল। ওয়েটার লোকটি যখন ফিরে এলে, সে টেবিলটি মুছতে শুরু করে এবং তারপর যা দেখলো তাতে তার চোখে জল আসলো। সেখানে, খালি প্লেটেরর পাশে সুন্দরভাবে রাখা ছিল, ১৫ সেন্ট তার টিপ। – গল্পের শিক্ষাঃ কাউকে উপরের রুপ দেখে অবহেলা করা উচিত নয়।

 

 

নৈতিক শিক্ষামূলক গল্প – ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 06


একবার একদল ব্যাঙ বনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় এই ব্যাঙ এর দল থেকে দুইটি ব্যাঙ গভীর গর্তে পরে গেলো । গর্তটি এতটা গভীর ছিল যে সেটি থেকে উঠে আসা খুবই কঠিন। তবুও ব্যাঙ দুইটি তাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছিল। দলের অন্য ব্যাঙ গুলো বলাবলি করছিলো যে এদের এই গর্ত থেকে বের হয়ে আসার কোন আশা নেই। কিন্তু আদম্য ব্যাঙ দুইটি চেষ্টা করতেই থাকলো, তারা প্রাণপনে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদটির ঢালু জায়গা পার করে শেষের দিকের খাড়া অংশের কাছে এসে এসে আবার উল্টো নিচের দিকে পরে যাচ্ছিল। তখন উপরে থাকা বাকি ব্যাঙ গুলো চিৎকার করে তাদের বলছিল

যে, “তোমরা কিছুতেই উপরে উঠতে পারবেনা”, “এটি খুবই বড় গর্ত”,“ এখান থেকে উঠে আসা কোন ভাবেই সম্ভব না” তাদের কথা গুলো এমন ছিল যেন তারা বলতে চাইসে শুধু কষ্ট করে লাভ নেই, আশা ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুকে স্বীকার করে নাও কষ্ট থেকে মুক্তি পাও। দুইটি ব্যাঙ্ এর মধ্যে একটি তাদের কথায় কান দিলো এবং গর্তের উপরের দিকে ওঠা বাদ দিয়ে আরো গভীরের দিকে লাফিয়ে পরে মরে গেল। কিন্তু ২য় ব্যাঙটি আরো উদ্দ্যম নিয়ে লাফাতে লাগলো,আর উপরে থাকা ব্যাঙেরা আরো জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো “এই বৃথা কষ্ট করোনা,মৃত্যুকে সহজ করো”। কিন্তু ব্যাঙটি অবশেষে উপরে উঠে এলো।

উপরে ওঠার পর ব্যাঙটি যা বললো তাতে দলের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। ব্যাঙটি বললো- “ উপরে থেকে তোমাদের চিৎকার করে করে আমাকে উৎসাহ দেয়ার কারনেই আমি মনোবল পেয়ে উপরে উঠে আসলাম। তোমরা না থাকলে আমি হয়তো হাল ছেড়ে দিতাম। আমি কানে শুনতে পাইনা, শুধু চোখে দেখেছি তোমরা গলা ফাটিয়ে আমাকে উপরে উঠে আসতে বলছো”। গল্পের শিক্ষাঃ আশেপাশের মানুষের একটু উৎসাহ মানুষকে কঠিন বিপদেও সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। এবং নেতিবাচক কথায় কান না দিয়ে নিজ লক্ষ্যে অবিচল থাকলে সফলতা আসে।

 

শিশুদের শিক্ষামূলক গল্প – ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 07

প্রেরনা মূলক ছোট গল্প একবার এক পিতা ও পুত্র রাত্রিতে আহার গ্রহণের জন্য বসেছে, পুত্রের মা থালা করে সবজি ও পুড়ে যাওয়া রুটি তাদের কাছে নিয়ে এসেছে, পুত্রের মা জানতো যে রুটি গুলি ঝলসে গেছে আগুনের আঁচ লেগে। তাই তিনি খাবার দেওয়ার সময় নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন, তখন পুত্রের বাবা তার পত্নীকে বললেন তুমি ভেবোনা চিন্তা করনা, আমার ঝলসে যাওয়া শক্ত রুটি খুব খেতে ভালো লাগে। এই কথা শুনে পুত্ৰ অসন্তোষ অনুভব করলো, আর তার পিতাকে বলল পিতা আপনি সত্যি বলছেন ঝলসানো রুটি আপনার খেতে ভালো লাগে?

পিতা বললো তোমার মা আজ সারাদিন কাজ করেছেন, আর তিনি হয়তো আজ সত্যিই অনেক ক্লান্ত, আর পুড়ে যাওয়া রুটি এমন কিছু নয়, কিন্তু মুখ থেকে বলা কঠিন কোনো শব্দ মানুষের মনে অনেক বড়ো আঘাত সৃষ্টি করতে পারে, এই বলে পিতা তার পুত্রকে আরও বললো তুমি জানো পুত্র আমাদের জীবন ভুল ত্রুটি দিয়ে ভরা? আমি এমন কোনো মানুষ দেখিনি যিনি একেবারে পরিপূর্ন, যার মধ্যে কোনো দোষ বা ভুল নেই। আর আমি জীবন থেকে এটাই শিখেছি একে অপরের ভুল গুলোকে স্বীকার করে নিতে হয়। অন্যের ভুল গুলোকে ক্ষমার মাধ্যমে ও একে অপরকে তার ত্রুটি দিয়ে পছন্দ করতে জানতে হয়। তবেই সম্পর্কে সফলতা আসবে, এই ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পরি একে অপরকে যদি ক্ষমা করতে শিখতে জানি তাহলে জীবন হবে অনেক সহজ সরল ও আনন্দ ভরা মধুময়।

শিশুদের শিক্ষামূলক গল্প – ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 08

কুকুর আর তার মালিকের খাবার-
এক কুকুর রোজ তার মালিকের কাছে খাবার পৌঁছে দিত। খাবারের ঝুড়ি থেকে আসা চমৎকার সব খাবারের গন্ধে সেই কুকুরের খুব লোভ হত খাবারগুলো চেখে দেখার।

কিন্তু, নিজেকে সব সময় সামলে নিত সে। বিশ্বস্ততার সাথে নিয়মিত সে তার কাজ করে যেত। কিন্তু একদিন পাড়ার সব কুকুরেরা একসাথে তার পিছু নিল। চোখে তাদের তীব্র আকাঙ্খা, মুখ থেকে লোভ ঝরে পড়ছে। সমানে তারা চেষ্টা করতে থাকল ঝুড়ি থেকে খাবার চুরি করে খেয়ে ফেলার।

বিশ্বাসী কুকুরটি অনেকক্ষণ তাদের থেকে পালিয়ে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ধাওয়া করে আসা কুকুরগুলো এক সময় এমন ভাবে তাকে ঘিরে ধরল যে সে দাঁড়িয়ে পড়ল।

কুকুরগুলোর সাথে তর্ক করে সে তাদের বোঝাতে চাইল যে তারা কাজটা ঠিক করছে না। চোর কুকুরগুলো ঠিক এটাই চাইছিল। তারা এমনভাবে তাকে বিদ্রূপ করতে রইল যে একসময় সে রাজী হয়ে গেল।

“ঠিক আছে, তাই হোক,” বলল সে, “তবে, ভাগাভাগিটা কিন্তু, আমি নিজে ঠিক করব।” এই বলে মাংসের সবচেয়ে ভালো টুকরোটা সে নিজের জন্য তুলে নিল আর বাকিটা ঐ কুকুরগুলোকে দিয়ে দিল।

শিক্ষাঃ সম্পদের অংশীদার না করে চিরকাল কাউকে দিয়ে সেই সম্পদের ভার বওয়ান যায় না। একদিন না একদিন সেই বঞ্চিত লোক ঐ ভার লুট করে নেবেই।



শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প দারিদ্রতা-ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 09

একটা গরিব বাচ্চা তার বিধবা মাকে জিজ্ঞাসা করল – আচ্ছা মা, ঈদে সবাই নতুন নতুন কাপড় বানায়, ভালো ভালো খাবার খায় কিন্তু আমরা নতুন কাপড় ও বানাইনা, ভালো খাবারও খাই না কেন … ??? ছেলের এইরকম প্রশ্ন শুনে মায়ের চোখে পানি এসে গেল। মা ভাবতে পারছে না যে তার এই অবুঝ শিশুটাকে কিভাবে বুঝাবে !!!

শিশুটা পুনরায় জিজ্ঞাসা করল বল না মা??? মা তখন শিশুটাকে বুঝিয়ে বলল, যারা ঈদে নতুন জামা-কাপড় বানায়, ভালো খাবার খায়, তারা তো ১ মাস কষ্ট করে না খেয়ে রোজা রেখে। তাই আল্লাহ্ তাদের পুরস্কার দেয়। আর আমরা তো সারা বছর না খেয়ে কষ্ট করি তাই আমাদের রোজা শেষ হয় না।

যখন আমরা মরে যাব তখন আল্লাহ্ আমাদের জান্নাতে পুরস্কার দিবেন, নতুন নতুন কাপড় পরাইয়া দিবেন, ভাল ভাল খাবারও দিবেন। তখন শিশুটা তার মাকে বলল, চল না মা আমরাও মরে আল্লাহ্র কাছে চলে যাই। আমারও অনেক ইচ্ছে করে ঈদ করতে, ভাল খাবার খেতে, নতুন নতুন কাপড় পরতে। চল না মা মরতে যাই … চল না … !!!

নির্বাক মা তখন চোখে অশ্রু নিয়ে তার কাপড়ের আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে তার অবুঝ শিশুর দিকে তাকিয়ে রইলেন কারন তার কাছে যে আর কোন উত্তর নেই .. এসব শিশুদের জন্য বড্ড মায়া হয়। কিন্তু কিছুই করতে পারিনা এদের জন্য। আপনি যদি পারেন, অন্তত ১টি শিশুর জন্য কিছু করবেন



শিক্ষনীয় মোটিভেশনাল গল্প – ছোট শিক্ষণীয় গল্প। শিক্ষনীয় কষ্টের গল্প – 10


একটি ছোট পাখি আকাশের অনেক উপর দিয়ে উড়তে গিয়ে ঠান্ডায় জমে বরফ হয়ে ধপ করে এসে পড়লো একটা খোলা মাঠে।

পাশেই একটা গরু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘাস চিবাচ্ছিল। সে কোৎ করে এক দলা গোবর হেগে দিল পাখিটার উপর।

পাখিটা গোবরে ডুবে গেলেও সদ্য পতিত গোবরের গরমে তার শরীরের বরফ সব গলা শুরু করলো।

একটু পরে পাখিটা সুস্থ হয়ে গোবরের ভেতরে বসেই কিচমিচ কিচমিচ ডাক শুরু করলো।

পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো এক হুলো বেড়াল। সে পাখির আওয়াজ পেয়ে গোবর ঘেঁটে পাখিটাকে বের করলো। তারপর কপাৎ করে গিলে ফেলল।

মর্মার্থ – ১: কারো শত্রুতা মূলক কাজ সব সময় যে তোমার বিপক্ষে যাবে এমন নাও হতে পারে। কোন কোন বৈরী কাজ হয়তো তোমার উপাকারেই আসবে।

মর্মার্থ – ২: কেউ তোমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করলো মানেই যে সে তোমার শুভাকাঙ্খি এমন নাও হতে পারে। সে হয়তো তোমার সবচেয়ে বড় শত্রু।

মর্মার্থ – ৩ : যখন তুমি ঘোর বিপদে তখন দয়াকরে মুখটা বন্ধ রাখো।

 

আজকের এই শিক্ষণীয় গল্প -শিক্ষামূলক গল্প বা শিক্ষামূলক গল্প ও ঘটনা গুলি বা সাফল্যের গল্প গুলো কেমন লাগলো আপনাদের তা কমেন্ট করে জানাবেন………………

Next Post :  10টি অনুপ্রেরণামূলক গল্প।Motivational story in bengali।10টি মোটিভেশনাল গল্প

Join Our Group

Join Telegram