আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ১০টি সেরা অনুপ্রেরণামূলক গল্প,Inspirational story in bengali,যা আপনাকে মোটিভেশন বা অনুপ্রেরণা জোগাতে সাহায্য করবে।
Image: 10টি অনুপ্রেরণামূলক গল্প -মোটিভেশনাল গল্প
তাই দেড়ি না করে দেখে নেওয়া আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ কিছু নতুন প্রেরণামূলক গল্প, নতুন অনুপ্রেরণামূলক গল্প এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে মোটিভেশনাল গল্প,বিশ্বের সেরা উক্তি,প্রেরণামূলক উক্তি,মোটিভেশনাল উক্তি,সেবামূলক উক্তি,নিজেকে নিয়ে উক্তি,সফলতার উক্তি,বিশ্বাস নিয়ে উক্তি,শিক্ষামূলক উক্তি, Motivational story,Inspirational Quotes, পাওয়ার এবং পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট westbengaltoday.in ভিজিট করুন।
[A] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -01: জীবনের লক্ষ্য খুঁজুন।
আপনার কি মনে হয় আপনার ভিতরে কোন Passion নেই? আর এই কারনেই আপনি এখনও সফল হতে পারছেন না? যদি তাই মনে হয় তবে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন আমি আপনার সব ভুল ধারনা দূর করে দিব। সবার প্রথমে যেনে নিন আপনার ভিতরে কোন না কোন Passion অবশ্যই আছে। হয়তো আপনি এখন জানেন না যে সেই Passion টা বা কাজটা কি! যদি আপনার ভিতরে কোন Passion না থাকতো তাহলে আপনি এই অনুপ্রেরণার গল্প না পড়ে অন্য কোন Hot গল্প বা Funny কোন দেখতেন।
◼️KFC প্রতিষ্ঠাতা Colonel sanderc । KFC শুরু করার আগে তিনি ওকালতি করে জীবন জাপন করতেন। তার পরে তিনি অনেক ছোট ছোট ব্যাবসা ও চাকরি এবং বিভিন্ন জায়গাতে কাজ করেছেন। কিন্তু এগুলোতে তার Passion ছিলো না তাই এভাবেই কেটে যায় তার ৪০ টা বছর! ৪০ বছর পরে সে অনুভব করলেন তার Passion হলো মানুষকে খাবার খাওয়ানো। আর এই Passion তার মধ্যে এসেছিলো ৭ বছর বয়স থেকে যখন সে তার ভাইবোন কে খাবার বানিয়ে খাওয়াতেন। এখন আমাদের সবার জানা যে তার Passion খুজে পাওয়ার পরে সে সারাটা জীবন সেটাই করে গিয়েছেন। তিনি এমন সফলতা পেলেন তার মৃত্যুর পরেও সেটা কমেনি বরং সারা বিশ্ব জুড়ে তার নাম। এবার হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে যতখন আমার Passion খুঁজে পাচ্ছি না ততখন কি করবো? এর উত্তর হলো আপনি সব সময় কিছু না কিছু করতে থাকেন একদিন আপানর Passion আপনি ঠিক খুঁজে পেয়ে যাবেন।
◼️মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুক এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ফেসবুক তৈরি করার আগে কখনই এটা নিয়ে ভাবেনি। প্রথমে সে কিছু ছোট ছোট টুলস তৈরি করেন এবং পরে সব গুলো একসাথে করে ফেসবুক বানিয়ে নেয়। এটা ছিল তার একটি কলেজ প্রোজেক্ট যখন ফেসবুক সফল হলো তখন মার্ক Passion খুঁজে পেলেন।
◼️Amazon আজ পৃথিবীর সবথেকে বড় দোকান যা শুরু হয়েছিলো শুধু মাত্র বই বিক্রি দিয়ে। Amazon এর প্রতিষ্ঠাতা এ নিয়ে কোন Passionate ছিলেন না যে তিনি সবথেকে বড় দোকান বানাবেন।
◼️Google এর প্রতিষ্ঠাতা যে কোন দিন ভাবেওনি তাদের ছোট একটি কলেজ প্রোজেক্ট আজকে পৃথিবীর সবথেকে বড় কোম্পানিতে পরিনত হবে। তারা Website এর নাম নিয়েও Passionate ছিলেন না এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে প্রথমে Action হয়ে ছিলো আর পরে Passion এসে ছিলো।
তো বন্ধুরা যদি এখনো আপানর মনে হয় যে আপনাদের ভিতরে কোন Passion নেই তবে বলবো যে আপনি এখনো আপনার Passion এর সাথে মিলতে পারেন নি। আর এর জন্য আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে তাহলে Passion আপনাকেই খুঁজে নিবে ইনশা-আল্লাহ। সফল ব্যাক্তিরা প্রথমে Fail হয়েছেন এবং Failur থেকে শিক্ষা নিয়ে হাসি মুখে Positive attitude এর সাথে পুনরায় কাজ শুরু করেছেন। এখন আপনি যেটা করছেন সেটায় ১০০% দিন হতে পারে চাকরি বা পড়ালেখা মন দিয়ে করবেন Passion আপনাকে খুঁজে নিবে।
একটা কথা মনে রাখবেন বিজয়ীরা কখনো হার মানে না আর হার মানা মানুষ কখনো বিজয়ী হয় না। আক্ষেপ করে তুমি কোথাও পৌছাতে পারবে না কিন্তু চেষ্টা করে যেতে পারবে। বিজয়ীর আসল পরিচয় হলো হেরে যাওয়ার পরেও আবার চেষ্টা করা।সঠিক ভাবে শুনতে শেখো কারন, সুযোগের ডাক মাঝে মাঝে হালকা ভাবে আসে-তাই তৈরি থাকো সবসময়।
[B] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প – ২% মানুষ সফল কেন? বাকি ৯৮% কেন সফল নয়?
জীবনে সফল হতে গিয়ে কে কি করেছে সেটা না ভেবে আপনি আপনার মতো কাজ করে এগিয়ে যান। আপনি কি জানেন পৃথিবীতে মাত্র ২% মানুষ সফল কেন? বাকি ৯৮% কেন সফল নয়? এটা এই জন্য যে তারা কোন কিছু না ভেবেই অন্যদের নকল করতে থাকে।
- চৌধুরী বাবুর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে আমিও হবো।
- খান বাবুর ছেলে ডাক্তার হয়েছে আমিও হবো।
- রামদা নতুন ব্যবসা শুরু করেছে আমিও করবো।
এমন অনেক উদাহরণ আপনাদের চার পাশে পাবেন যারা নকল করতে থাকে তারা কখনও সফলতা পায় না। কারন নকল করতেও অবশ্যই বুদ্ধিও প্রয়োজন একটি উদাহরণ আছে,, একজন চাকরিজীবী লোক অফিস শেষ করে রাত ১০ টায় বাড়ি ফিরছিলো। সে দেখে তিন জন চোর একটা গলিতে দারিয়ে আছে তাই তিনি তাদের বলেন আপনারা এখানে দারিয়ে কি করছেন? তারা বলে আমরা দারিয়ে আছি কিছু লোকের থেকে টাকা নিতে হবে তাই। লোকটি বলে আপনারা কি তাদের কাছে টাকা পাবেন? তিন চোর হেঁসে উত্তর দেয়, না আমরা কিছু মানুষের থেকে জোর করে টাকা নিবো না দিতে চাইলেও। ভদ্র লোকটি তাদের কথা শুনে অবাক হলেন এবং বললেন আমিও আপনাদের সাথে এই কাজটা করতে চাই। চোর গুলো কিছু সময় ভেবে উত্তর দিলো আচ্ছা ঠিক আছে লোকটি যেহেতু চুরি করতে জানে না তাই চোরের দল তাকে কিছুটা বুঝিয়ে দিয়ে একটা কাগজে লিখে দিলেন। কাগজের লেখা অনুযায়ী ভদ্র লোকটি একটা ঘরের ভিতরে ঢুকে চুরির চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু হঠাৎ করে সে শব্দ করে ফেলে যার কারনে বাড়ির মানুষ ঘুম থেকে জেগে উঠে এবং তাকে ইচ্ছা মতো মারধর করতে থাকে। তখন চাকরিজীবী ভদ্র মানুষটি বলে কাগজে তো এটা লেখা ছিলো না।
এই গল্প দ্বারা আমরা কি বুঝি নকল করতেও বুদ্ধি লাগে, যার কারনে ২% মানুষ কেবল মাত্র সফল এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের আলাদা আলাদা ট্যালেন্ট আছে।
🔹সব মানুষ স্টিভ জবস হতে পারে না।
🔹সব মানুষ বিল গেটস হতে পারে না।
🔹সব মানুষ মার্ক জুকারবার্গ হতে পারে না।
তাই নিজের মতো করে কাজ করলে আল্লাহ্ এটাতেই বেশি রহমত দান করবে। সততা খুব মূল্যবান একটি উপহার যা কোন ছোট মনের মানুষের ভিতরে থাকে না।
[C] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -03: সঠিক লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান
যার কথার চেয়ে কাজের পরিমাণ বেশি সাফল্য তার কাছে আসেই ধরা দেয়, কারন যে নদী যতো গভীর তার বয়ে যাওয়া শব্দ ততো কম।
আমরা যে কোন সফল ব্যাক্তির জীবনী দেখি প্রত্যেকের জীবন ধারন আলাদা কিন্তু একটি জায়গাতে মিলে যায় সেটি হলো, একটা স্বপ্ন দেখতে হয় আর সেটার পিছনে অবিরাম ছুটে চলতে হয় যেখানে পিছু ফিরে তাকানোর কোন উপায় নেই।
একটা প্রবাদ আছে, যদি উড়তে না পারো তাহলে দৌড়াও, যদি দৌড়াতে না পারো তাহলে হেঁটে চলো, যদি হাটতে না পারো তাহলে হামাগুড়ি দাও, যেটাই করো না কেন মনে রেখ তোমাকে সামনের দিকে যেতেই হবে।
শুধু একটাই লক্ষ্য থাকতে হবে যে আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌছাতে হবে তার জন্য যতটুকু পরিশ্রম করতে হবে আমি সেটা করবো। পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না কিছু না কিছু দিয়েই যায়। যে মানুষটা নিজেকে সকল সময় চালিত রাখতে পারে সাফল্য তার কাছেই ছুটে আসে সফলতা এমন একটা জিনিস যেটা সবাই পায় না, তারাই পায় যারা নিয়মিত চেষ্টা করে থাকে। আমাদের একটা কাজ আগে শুরু করতে হবে আর শুরু করলে সেটা একদিন শেষ হবে, শুরুই যদি না করি তাহলে শেষ কি করে হবে? মনে রাখবেন যার শুরু আছে তার শেষটাও আছে। সময়ের মূল্য অনেক তাই কাউকে তোমার সময় দ্বিতীয়বার নষ্ট করতে দিও না।
[D] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -04: জীবন বদলানোর সহজ নিয়ম
◼️Eric thomas: যখন আপনি জীবনে সফল হওয়া ওতটা জরুরী মনে করবেন যততা জরুরী আপনার নিঃশ্বাস নেওয়া কে মনে করবেন তখন আপনি সফল হয়ে যাবেন। ধরুন কেউ আপনার মাথা পানির ভিতরে চেপে ধরে রেখেছে, স্বাভাবিক ভাবে আপনি আর নিঃশ্বাস নিতে পারবেন না। আপনার দম আটকে আসবে এবং আপনি নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য আপনার সমস্ত শক্তি লাগাবেন মাথাটা পানির ভিতর থেকে তুলতে। পানি থেকে মুখতা তুলতে আপনার মাথায় তখন একটা জিনিস কাজ করবে যেকোনো মূল্যেই হোক আমাকে বাঁচতে হবে। তখন আপনার মস্তিষ্কে অন্য কোন চিন্তা ধারাই আসবে না, শুধু একটা কথা আমাকে বাঁচতে হবে, আমাকে বাঁচতে হবে। ঠিক একই ভাবে জীবনে সফল হওয়াটা ওতটা জরুরী মনে করেন তখন আপনার সফল হওয়াটা অনেক গুন বেড়ে যাবে।
◼️Wilter:
জীবনে বেশি মজা পাওয়া যায় ওই সব কাজ করে যেটাকে লোকে বলে তুই এটা পারবি না তোর দিয়ে হবে না। যখন আপনাকে কেউ বলবে তুই এটা করতে পারবি না তখন আপনার তার উপরে খুশি হওয়া উচিৎ কারন, আপনি কাজটা করার জন্য আরো একটা কারন পেয়ে গেলেন। আর যেখানে বাঁধা বেশি সেখানে মজাটাও একটু বেশি হয় জানেন? এখন আপনাকে কাজের প্রতি আর আগ্রহী হওয়া উচিৎ।
◼️Bill gates:
তখন থেমে যেও না যখন তুমি ক্লান্ত! তখনই থেকে যাও যখন তুমি কাজটা সম্পূর্ণ করে ফেলেছো।
◼️Zig ziglar:
কোন কাজ শুরু করার আগে আপনাকে মহান হওয়ার প্রয়োজন নেই আপনাকে মহান হওয়ার জন্য কাজটা করতে হবে। আমরা অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে না পাড়লে মনে করি হয়তো কাজটার জন্য আমি যোগ্য না বা সঠিক সময় এটা না। কিন্তু বিষয়টা আসলে এমন না কেউ কোন কাজ করার আগে সেটার সকল দিক যেনে আসে না বরং কাজে আসেই তার ভালো মন্দ বুঝতে পারে। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে মানুষ বড় থেকে ছোট হয় না, ছোট থেকে বড় হয়।
◼️Conrad hilton:
সফলতার সম্পর্ক কাজের সাথে সফল ব্যাক্তিরা সর্বদা পথ চলতে থাকেন তারাও ভুল করেন কিন্তু কখনই হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকেন না। আপনি যতো বেশি অনুপ্রেরণার ভিডিও বই গল্প পড়েন না কেন যদি সেই গুলো কাজে না লাগিয়ে থাকেন তাহলে কোন লাভ হবে না। আপনি যতটুকু কাজ করবেন ততটুকুই সফলতা পাবেন।
◼️Mark twain:
আজ থেকে ২০ বছর পর আপনি ওই জিনিস গুলো নিয়ে আফসোস করবেন যেগুলো আপনি করেন নি তার তুলনায় যেগুলো আপনি করেছিলেন। তো বাইরে বেরিয়ে পুরো পৃথিবীটাকে দেখুন সবাই সবার মতো করে কাজ করছে, শুধু আপনিই বসে বসে নিজের বেহাল জীবনের মানে খুঁজে চলছেন। আমরা অপরিচিত কোন কাজকে অনেক ভয় পেয়ে থাকি ভাই ভয় পেলে জয় করা যায় না। ভুল করতে করতে মানুষ বড় কিছু করে থাকে হয়তো, ওই একটা কাজ দিয়েই আপনি সফল হতে পারেন।
[E] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -05: আর নয় সময় নষ্ট
হয়তো এখন আপনার গুরুত্বপূর্ণ পড়া তৈরি করার কথা ছিলো বা হয়তো খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করার কথা ছিলো। কিন্তু ভেবেছেন ফেসবুক বা ইউটিউবে কিছু পোস্ট দেখবেন বা একটা ভিডিও দেখবেন এইভাবে দেখতে দেখতে একটি পর্যায়ে এসে এই ওয়েবসাইট থেকে অনুপ্রেরণার গল্প পড়ছেন। আপনি কী জানেন এমনটা হয় কেন? কেন আমরা একটা ভিডিও দেখবো বলে একটানা দশটা ভিডিও দেখে থাকি? কারন আমাদের মধ্যে একটা রোগ আছে রোগটা তেমন জটিল নয় কিন্তু ভয়ঙ্কর। এটা যার ভিতরে বেশি আছে তার জীবন শেষ, আর এর ঔষধ আপনার ভিতরেই এটার ঔষধ কনো দোকানে আপনি পাবেন না। রোগটির নাম হলো Procratination ঢিলেমি করা অর্থাৎ অকারনে সময় নষ্ট করা। তো এখন আমি একটা ট্রিক্স শেয়ার করবো আপনাদের সাথে হয়তো আজকের পর থেকে আপনি আর সময় নষ্ট করবেন না। এই ট্রিক্স টার নাম হলো The 5 second rule কোন কাজ করার আগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আপনার কাছে ৫ সেকেন্ড সময় থাকে। বাস্তবে আমাদের মস্তিস্ক খুব কমফোর্টেবল থাকতে চায় তার খুব ভাল লাগে যখন আমরা হাসি খুশি থাকি এবং খাটের উপরে শুয়ে আরাম করি। তখন আমাদের মস্তিস্কে ডোপামিন নামক এক কেমিক্যাল রিলিজ হয় আর আপনার মধ্যে একটা ভাল লাগার অনুভব আসে আমার আপনার মস্তিস্ক এই ভাবেই ডিজাইন করা। যেটা সব সময় চায় ভালো থাকতে, হাসি খুশি থাকতে, খারাপ ভাবনা থেকে দূরে থাকতে। সেই জন্যই আপনি যখন একের পর একটা নতুন ভিডিও বা অন্য কিছু দেখতে থাকেন তখনই ডোপামিন রিলিজ হয়ে আরো ভালো লাগা শুরু করে।
এই সময়টা আপনি জাস্ট বসে বসে সময় নষ্ট করতে থাকেন এই অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য আপনার কিছুটা পরিমাণ এক্টিভেশন প্রয়োজন হয়। যার দ্বারা আপনি ওইটা থেকে বের হয়ে কাজ করতে শুরু করতে পারেন। কিন্তু আপনার মস্তিস্কটা চায় না সে এই এনার্জিটা শেষ করুক এবং কাজটা না করার জন্য হাজারটা কারন দেখায়। কাজটা করার জন্য কি কি সমস্যা হবে সেই গুলো আর বড় বড় করে দেখাতে থাকে আমাদের মস্তিস্ক এমনটা করে কারন এটা আমাদের বেসিক ফাংশন। সে Problem ও Difficult situation থেকে আপনাকে রক্ষা করতে চায়। কিন্তু কোন পরিবর্তন আনার জন্য কোন নতুন কিছু করার জন্য ওই সমস্থ কিছু যা আপনার জীবন, আপনার কাজ, আপনার স্বপ্নকে পূরণ করবে, আপনাকে সেই সব কাজই করতে হবে যা Difficult যা Risky যা Uncomfortable । আমরা সবাই জানি পড়া লেখা না করলে ভবিষ্যতে কঠিন সময়ের সম্মুখীন হতে হবে সেই ভাবনা থেকে এনার্জি নিয়ে ৪ দিন খুব মন দিয়ে পড়ালেখা করলাম তার পরে মনে হলো ধুর যা হবার হবে পরে দেখা যাবে। তার পরে ধরুন আপনার একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ খাতা লিখতে হবে কিন্তু আপই কোন ভাবেই সেটা শুরু করতে পারছেন না এখন প্রশ্ন হলো এই সময় নষ্ট কিভাবে বন্ধ করা যাবে? এর জন্য ব্যাবহার করতে হবে The 5 second rule আপনি ৫ সেকেন্ডের জন্য সচেতন হয়ে যান। আর নিজেকে বলুন হা এটা আমি এখনি করবো এটা একটা রকেট লঞ্চের মতো 5 4 3 2 1 Gooo…. যেখানে না বলার কোন সুযোগ নেই।
ধরুন সকাল ৭ টায় আপনাকে উঠতেই হবে অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গে চোখটা খুলেই 5 4 3 2 1 Gooo…. উঠে পরুন। একবার উঠে পরলেই আর পিছু চিন্তা করা যাবে না। কোন কাজ করার আগে সকল মানুষের কাছে ৫ সেকেন্ড সময় থাকে যদি আপনি তার ভিতরে সিন্ধান্ত না নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার মস্তিস্ক আপনার সাথেই ট্রিক্স খেলা শুরু করবে। মনে হবে আর ১০ মিনিট শুয়ে নিই কি আর এমন ক্ষতি হবে কিন্তু আপনি দেখবেন ১০ মিনিটের জায়গায় আপনি ১ ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন। সারা দিন এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয় যেখানে আপনাকে সিন্ধান্ত নিতে হয় তার ভিতরে আপনার আইডিয়াকে একশনে পরিনত করতে হয়। সেটা না হলে আপনার মস্তিস্ক আপানকে বলবে কাজটা পরেও করা যাবে আর আপনি ঢিলেমি করতে শুরু করবেন। সেই জন্য ৫ সেকেন্ডের মধ্যেই সিন্ধান্ত নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে যাতে আপনার টার্গেটের দিকে আপনি যেতে পারেন। এটা যদি আপনি নিয়মিত করেন তাহলে আপনার অভ্যাসে পরিনত হয়ে আপনাকে জয়ী করবে। Mel Robbins এর The 5 second rule ব্যাবহার করে সারা পৃথিবীর মানুষ আজকে সফল হয়েছেন, আশা করি আপনিও হবেন ইনশা-আল্লাহ্।
[F] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -06 : স্টিভ জবসের কষ্টের জীবন
সর্বকালের সেরা উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি হলেন একজন। শুধু একটি কথা মনে রেখো আমি খুব তাড়াতাড়ি মরে যাবো এই কথাটি জীবনের সব থেকে বড় সিদ্ধান্ত গুলো নিতে সাহায্য করবে। কারন যখন আমি মৃত্যুর কথা ভেবে থাকি তখন সমস্ত গৌরব অহংকার হারিয়ে যায় শুধু সেটাই থাকে যেটা সত্যি আমার খুব প্রয়োজন। বিখ্যাত বানীটি করেছেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণা গল্পের এক দৃষ্টান্ত স্টিভ জবস। যিনি নিজের বুদ্ধি আর অক্লান্ত পরিশ্রম দ্বারা পৃথিবীর সব থেকে প্রভাবশালী কোম্পানি তৈরি করেছেন।
তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ফেব্রুয়ারি ২৪-১৯৫৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়াতে তার মা ছিলেন একজন অবিবাহিত এবং কলেজ স্টুডেন্ট। তাই তাকে নিজের কাছে রাখতে পারেনি এবং তাকে একটি পরিবারের কাছে দত্তক দেওয়ার কথা ভাবে। পরে পলজবস ও ক্লিরাজবস একটি গরিব পরিবারের কাছে দিয়ে দেয় কিন্তু শর্ত রাখেন স্টিভকে উচ্চ শিক্ষা দিতে হবে এবং তারা সব কিছু মেনে নিয়ে স্টিভকে গ্রহণ করেন। পলজবস ও ক্লিরাজবস এর কাছে বেশি টাকা ছিলো না তাও তারা স্টিভ এর কোন চাওয়া অপূরণ রাখেন নি। জবসের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়েছিলো মন্টালমা স্কুল থেকে ১৯৭২ সালে ১৭ বছর বয়সে জবস খুব দামি কলেজে স্ট্যানফোর্ডে ভর্তি হন। পড়া-লেখা করাতে গিয়ে তার বাবা-মার সকল টাকা শেষ হয়ে যায় ৬ মাস পরে স্টিভ এর খুব কষ্ট হয় তার বাবা-মাকে দেখে। হতাস হয়ে তিনি কলেজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে এবং তার কাছে থাকার মত কোন বাড়ি ছিল না তাই তিনি তার এক বন্ধুর রুমের মেঝেতে ঘুমাতেন। কোল্ডিংস এর বোতল বিক্রি করে যা টাকা পেতেন সেটা দিয়ে খাবার খেতেন প্রতি রবিবারে ১১ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে একটা গির্জায় যেতেন ভালো খাবার খেতে। কিছুদিন পরে সে একটা ব্যাবসার কাজে লেগে পরেন এবং বাবার গ্যারেজে বসে তার এক বন্ধুর সাথে অপারেটিং সিস্টেম MAC-IN-TOSH তৈরি করেন। এর পর নিজের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে ১৯৭৫ সালে ২০ বছর বয়সে অ্যাপল কোম্পানি তৈরি করেন। যা মাত্র ১০ বছর পর ৪ হাজার লোকের কোম্পানিতে পরিনত হয়ে যায় যার মূল্য দারায় ২ বিলিয়ন ডলার।
কিন্তু স্টিভ জবসের এই সফলতা তার জিবনে বেশি দিন টিকলো না। নিজের কোম্পানির পার্টনারদের সাথে মতের অমিলের কারনে কোম্পানির মার্কেট খারাপ হতে থাকে। কোম্পানির একটা বোর্ড মিটিং এ সকল দোষারোপ তার উপরে দেওয়া হয় এবং তাকে নিজের কোম্পানি থেকে ১৯৮৫ সালে বের করে দেওয়া হয়। এটিই ছিলো স্টিভ জবসের সব থেকে বড় দুঃখের সময়! কিছু দিন স্টিভ খুব কষ্টে কাটালেন এবং কষ্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে PIXAR কোম্পানি তৈরি করেন। পিকচার পৃথিবীর প্রথম এনিমেশন মুভি টয়স্টরি তৈরি করে, বর্তমান পিকচার পৃথিবীর সব থেকে বড় এনিমেশন স্টুডিও। এর কিছু দিন পরে জবস APPLE কোম্পানিকে ক্রয় করে নেন। এইভাবেই জবস তার আগের কোম্পানিতে ফিরে আসেন এবং অ্যাপল কোম্পানির CEO হয়ে যান। তিনি মনে করেন প্রোডাক্ট Quantity নয় Quality উপরে নজর দিয়ে হবে। ৫ অক্টোবর ২০১১ কান্সারের কারনে ক্যালিফোর্নিয়াতে মৃত্যু বরন করেন। তিনি বলেছিলেন যারা পাগলের মত মনে করে পৃথিবীকে পালটাতে পারবে তারাই পালটাতে পারে।
আমরা এই গল্প থেকে কি বুঝতে পারি? একটি মানুষ কত বার ব্যার্থ হবার পরেও সে হাল ছেড়ে না দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে সেরা করেছেন। কখনোই নিজের জীবনকে বৃথা ভাবেনি সময়ের সাথে যুদ্ধ করে সপ্নকে সত্যি বলে রূপ দিয়েছেন। আমাদের সকল দুঃখ কষ্ট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ নিজেকে বুঝাতে হবে আমাকে পারতেই হবে, কেন আমি পারব না। স্বপ্ন দেখেন বড় বড় আর অনেক ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করেন কিছু করুন আগামি কালের জন্য। যারা আজ আপনাকে নিয়ে উপহাস করে তাদেরকে দেখিয়ে দিন আপনি কি করতে পারেন।
স্টিভ বলেছেন আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা অল্পতেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি অন্তত নিজের উপরে বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান। আপনি আজ থেকে নিজেকে নিয়ে ভাবুন, কি করছেন নিজের জন্য? আপনি আপনার মধ্য থেকে জ্বলে উঠুন।
[G] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -07: মার্ক জুকারবার্গ এর ব্যার্থ জীবন।
আমরা জানি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক এই জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক সাইট এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন মার্ক জুকারবার্গ। আধুনিক যুগে মার্ককে চিনেন না এমন কাউকে খুজে পাওয়া অসম্ভাব প্রায় তিনি এমনই একজন সফল ব্যাক্তি যিনি মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। একজন ব্যাক্তির স্বপ্ন পূরণ আর শ্রম দেওয়ার মানসিকতা থাকলে সবই সম্ভাব বয়স কোন বেপার না এমনই এক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন মার্ক জুকারবার্গ। তিনি একজন অ্যামেরিকান প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার বর্তমানে তিনি ফেসবুকের প্রধান কর্মকর্তা। মাত্র ২৬ বছর বয়সে মার্ক টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টান্তে বছরের সেরা ব্যাক্তিত হিসাবে নির্বাচিত হয় ২০১০ সালে মার্ককে নিয়ে একটি ছবি বের করা হয়, যার নাম দা সৌশ্যাল নেটওয়ার্ক। যেখানে তিনি তার জীবন ও ফেসবুক আবিষ্কার তুলে ধরেছেন ২০১৬ সালে তিনি ফোব্রসের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ধনী মানুষের মধ্যে ৫ নাম্বারে অবস্থান করেন। ২০১৮ সালে তার সম্পত্তির পরিমাণ ৬৬.৪ বিলিয়ন ডলার আমাদের এই গল্পে থাকছে কিভাবে সপ্নকে সার্থক করতে হয় এবং বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়।
যুক্ত রাষ্টের এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও সফটওয়্যার ডেভেলপারের পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ। তিনি ১৯৮৪ সালে ১৪ই মে জন্ম গ্রহণ করেন অ্যামেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে তার বাবা হলেন একজন ডেন্টিস্ট ও মা হলেন সাইকোলজিস্ট। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনিই হলেন বড় মার্ক প্রাথমিক স্কুল থেকেই প্রোগ্রামিং খুব আগ্রহী ছিল মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই তিনি শখের বসে সফটওয়্যার বানাতে শুরু করেন। প্রোগ্রামিং এ খুব আগ্রহ থাকায় তার বাবা তাঁকে ১৯৯০ সালে তাঁকে আটারি বেসিক প্রোগ্রাম শেখানোর জন্য একজন শিক্ষক রেখে দেয়। মার্কের বয়স যখন ১২ বছর তখন তিনি একটি ম্যাসেজিং সফটওয়্যার তৈরি করে যার নাম দেয় জাকনেট। যে বয়সে ছেলেরা গেমস খেলে আর মার্ক সে বয়সে তৈরি করে এবং একটি মিউজিক প্লেয়ারও বানায় সে। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মার্ক Ardsley high school এ অধ্যায়ন করে ২০০২ সালে তিনি হার্ভার্ড কলেজে ভর্তি হন। তিনি আবার course match নামে একটি সফটওয়্যার চালু করে এটি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ায় সাহায্য করে। মার্ক হার্ভার্ড দ্বিতীয় বছর চলাকালিন ২০০৩ সালে তিনি ফেচম্যাস তৈরি করে এবং এতে কলেজের ৯টি শাখার শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যবহার করেন তিনি দুইটি ছবি পাশা-পাশি দিয়ে ভোট দিতে বলেন কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ। সেখানে মাত্র ৪ ঘন্তায় ৪৫০ ভিজিটর ২২ হাজার ছবিতে অনলাইনে ভোট দিয়ে ফেচম্যাস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
এটা থেকে অনুপ্রানিত হয়ে ২০০৪ সালে নতুন কোড লেখা শুরু করে ফেরুয়ারিতে হার্ভার্ডের ডরমিটরিতে ফেসবুক উদ্ভাবন করেন। তার পরে ফেসবুক ব্যবহার কারিদের সংখ্যা দারায় ১ মিলিয়নের বেশি। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেয় এর উপরেই তিনি তার সকল সময় দিয়ে কাজ করবেন কিছু দিন পরেই তিনি হার্ভার্ড থেকে ড্রপ নিয়ে বন্ধুদের সাথে কাজ শুরু করেন। ২০০৫ সালের আগস্টে তিনি দা ফেসবুক নাম পরিবর্তন করে নাম দেয় ফেসবুক। ফেসবুক প্রথমে হার্ভার্ড ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হলেই পরে ২০০৫ সালে সবার জন্য করে দেয়। ফলস্বরূপ তার ব্যবহার কারিদের সংখ্যা দারায় ৯ মিলিয়নের বেশি। ফেসবুকের উন্নতি দেখে বিভিন্ন কোম্পানি কিনে নেওয়ার জন্য বলে কিন্তু মার্ক সবাইকে না বলে দেয়। ধিরে ধিরে ফেসবুক হয়ে উঠে সামাজিক যোগাযোগ এর একটি অন্যরকম মাধ্যম এবং এটা দিয়েই হয়ে জান জনপ্রিয়।
তিনি বলেন যদি আমি এই কাজটা না করতাম তাহলে অন্য কেউ কাজটা করতো। যদি আমি ভালবাসা দিয়ে কাজটা না করতাম তাহলে হয়তো এতো সফলতা পেতাম না,, আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই সপ্নে আস্থা ছিল। আর আমি কাজটা কে ভালবাসতাম ফেসবুক বিফলে গেলেও আমার ভালবাসাতা থাকতো। জিবনে একটি স্বপ্ন দেখতে হয় তাঁকে ভালবেসে আগলে রাখতে হয়।
◼️অন্য একটি তথ্য থেকে জানা যায়…… ”মার্ক জুকারবার্গের গার্লফ্রেন্ড তার সাথে ব্রেকআপ করে নেয় এবং তাঁকে সকল সৌশ্যাল সাইট থেকে ব্লক করে দেয়, কিছু দিন পরে সে ব্যাক্তি পৃথিবীর সব থেকে বড় সৌশ্যাল সাইট FaceBook তৈরি করে।”
মার্ক বলেন
আজকে তুমি কোথায় সেটা তোমার অতিতের কর্মের ফল, কাল তুমি কোথায় পোঁছাবে সেটা তোমার আজকের কর্মের ফল।
কিসের এতো দুঃখ তোমার যার জন্য নিজের জীবন নিঃস্ব করে দিচ্ছো, সে কি ভুলেও তোমার খবর নেয়, না কি তুমি তার সপ্নে যাও। তাই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসো, বাহিয়ের পুরো পৃথিবীটা মন খুলে দেখ, খোলা হাওয়ায় চোখটা বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিতে থাকো, দেখবে যে তোমার বলতে তুমিই আছো, আর কেউ নেই। এই পৃথিবীতে সবাই স্বার্থপর, কেউ কারো না। আজ তুমি ভাল জায়গায় গেলে তারা তোমাকে দেখে আফসোস করবে, আর না যেতে পারলে তুমি তাদের কে দেখে আফসোস করবা।
[H] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -08: আপনি যা চাইবেন তাই পাবেন।
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় কম্পিউটার ও মানুষের মস্তিস্কের মধ্যে কে বেশি শক্তিশালী? আপনি হয়তো ১০ সেকেন্ড ভেবে উত্তর দিবেন কম্পিউটার বেশি শক্তিশালী। হ্যাঁ আমার আপনার মতো সাধারন মানুষ হয়তো এটাই ভাবছে কম্পিউটার বেশি শক্তিশালী কিন্তু এটা আমাদের ভুল ধারনা তবে চলুন কয়েকটা তথ্যের মাধ্যমে দেখি।
একটা সাধারন মানের কম্পিউটার স্টোরে করতে পারে প্রায় ২ লক্ষ্য ছবি ২০ হাজার গান কয়েকশত সিনেমা, একসাথে ১ থেকে ৫ বিলিয়ন প্রসেস হেন্ডেন করতে পারে। আবার এটার সাথে তুলনা করা হোক আমাদের মস্তিষ্কের, আমাদের মস্তিষ্ক একসাথে এক সেকেন্ডে ৩৮ হাজার ট্রিলিয়ন অপারেশন সামলাতে পারে আর এটা আমরা বুঝতেও পারি না। এটা একদম সত্যি কথা কোন মিথ্যা নেই |
কারন আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার বেঁচে থাকার জন্য সিরার মধ্যে একদম নির্দিষ্ট প্রেসারে কে রক্ত সঞ্চালন করছে? আপনার হার্টবিট কে কন্ট্রোল করছে? আপনি যেনে শুনে কি হার্টবিট কন্ট্রোল করতে পারেন? অবশ্যই না। আপনার বেঁচে থাকার জন্য শরীরে সঠিক উষ্ণতা কে বজায় রাখে? কোন সেই জিনিস যে আপানর শরীরের ৬০ ট্রিলিয়ন কোষকে প্রতি সেকেন্ডে ৬০ ট্রিলিয়ন ইন্সট্রাকশন বা নির্দেশ দেয় এটাকে বলা হয় Subconscious mind বা অবচেতন মন।
এই তথ্য গুলো শুনে মনে হচ্ছে এটা কতো শক্তিশালী ? কিন্তু একটা কাজ যা এই অবচেতন মন করতে পারে না তা হলো, একটা সত্যি ঘটনা আর মিথ্যা ঘতনার পার্থক্য। এটা শুনে কেমন লাগছে তাই না? হ্যাঁ এটাই সত্যি আমরা যখন ঘুমের মধ্যে একটা ভয়ের স্বপ্ন দেখি তখন আমাদের হার্টবিট বেড়ে যায় এবং গাঁ ঘামতে শুরু করে আমরা ভয় পেতে থাকি কিন্তু বাস্তবে কি আমরা আদেও কোন ভয়ের ভিতরে ছিলাম? অবশ্যই না আমাদের অবচেতন মন এমন ভাব করে যেন আমরা সত্যিকারের বিপদে আছি।
সুতরাং আমাদের ভাবতে হবে মস্তিষ্কের এই শক্তিকে কিভাবে আমাদের জীবনকে উন্নতির কাজে ব্যবহার করা যাবে, যাতে আমরা জীবনে সফল হতে পারি এবং আমরা এমন কিছু করতে পারি যেন পৃথিবীর সেরা মানুষের তালিকায় আমাদের নাম আসে। আমাদের মস্তিষ্কে সেই ভাবেই কাজে লাগাতে হবে মাথার ভিতরে পজিটিভ চিন্তা ধারা সবার থেকে আলাদা কিছু করার চিন্তা ধারা আনতে হবে।
◼️বিখ্যাত লেখক William golding একবার বলেছিলেন মহান এই নিয়ন নিতি সব সহজ সরল হয় এই নিতিকে বলা হয় কাটা ও বোনার নিতি। এই সহজ নিতিটা বলে আমাদের মস্তিষ্ক একটা বাগান, আর আমাদের চিন্তা ভাবনা হলো একটা বীজ, আমরা যে চিন্তা ভাবনা আমাদের মস্তিষ্কে রোপণ করবো সেটাই ধিরে ধিরে ঘটতে থাকবে। একটা বিষয় আমি আপনাদের জোর দিয়ে বলতে পারি যদি কোন আইডিয়া আপনার মস্তিষ্কে রোপণ করতে পারেন এবং অনুভব করতে পারেন আপনি সেটা করছেন এই চিন্তা ধারা নিয়ে যদি কাজটা করতে থাকেন তাহলে আপনার কাজটা একদিন সফলতা পাবেই। কারন এটা একটা সিদ্ধান্ত একটা Universal law হয়তো এখন আপনি ভাবছেন যদি এটা এতই সহজ ও কার্যকারী হতো তাহলে বেশির ভাগ মানুষ কেন ওই জিনিস গুলো পায় না যে গুলো তারা চায়? কারন তারা বেশি ফোকাস করে সেই জিনিস গুলোতে যা তাদের জীবনে প্রয়োজন নেই। এই বাক্যটির দুটি অর্থ আছে!….
1.নেগেটিভ জিনিস বা চিন্তা ধারার পিছনে বেশি সময় নষ্ট করা এবং কোন কাজ শুরু করার আগেই তার ব্যার্থ হবার চিন্তা। এর কারনে তারা মনের অজান্তেই মাথার ভিতরে খারাপ বীজ রোপণ করে থাকে ফল স্বরূপ এর থেকে একটা বিষাক্ত গাছ তৈরি হয়ে তার সব কিছু ধ্বংস করে দিবে।
2.তারা ওই জিনিস গুলোর পিছনে নিজের সকল সময় খরচ করে থাকবে যে গুলোর প্রয়োজন তারা কখনই করেনি। এটা জানা সরকার যে আমাদের Subconscious mind এর গভিরে কোন জিনিস পাঠাতে হলে তার একটা শক্তিশালী কারন দরকার আপনি যে কারন দিবেন সে ওটাই বিশ্বাস করবে। তার এটা জানা প্রয়োজন কোনো জিনিস আপনি কেনো চান? যদি এই কেনোর শক্তিশালী যুক্তি দেখাতে পারেন তাহলে আপনিই সফল!
[I] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -09: এ.পি.জে. আব্দুল কালাম অনুপ্রেরণার গল্প
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমাণু বিজ্ঞানী এ.পি.জে. আব্দুল কালাম যে ছোটবেলা কাটিয়েছে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে। তার বাবা ছিলেন একজন নৌকার মাঝি আর মা ছিলেন গৃহবধূ খুব গরিব পরিবারের ছেলে আব্দুল কালাম। পরিবারের দারিদ্রতা বার বার তার পড়ালেখার পথে বাঁধা হয়ে দারিয়ে ছিলো তাই খুব অল্প বয়সেই তিনি জীবিকা অর্জনের জন্য বিভিন্ন পেশায় কাজ করতে হয়। এমন কি স্কুল ছুটির পরে তিনি খবরের কাগজ বিক্রি করতেন এবং অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে তিনি নিজের পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছেন। পরে তিনি Josephs college ভর্তি হয়ে সেখান থেকে গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করেন এর পরে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন।
১৯৫০ সালে মাদ্রাস ইন্সিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজে ভর্তি হবার মেধা লিস্টে নাম উঠে ঠিকই কিন্তু সেখানে ভর্তি হওয়ার ফি ছিলো হাজার টাকা যা সেই মুহূর্তে তার কাছে ছিলো না! কিন্তু তার মা ও বোন তাদের সোনার গহনা বিক্রি করে দিয়ে তার ভর্তি ফি যোগার করেন। তার লেখাপড়ার প্রতি পরিবারের গভীর মনোভাব দেখে কালাম লেখাপড়ার প্রতি আরো মনযোগী হয়ে পরে। কলেজের কিছু প্রোজেক্টে তার খুব আগ্রহ দেখে একজন প্রোফেসর তাকে সিনিয়র ক্লাস প্রোজেক্টের দায়িত্ব দেয় কিন্তু সে সেটিতে ভাল করতে পারে না পরে স্যার তার উপরে রেগে বলে ৩ দিনের মধ্যে কাজটা না করতে পারলে তার মেধা বৃত্তি ফিরিয়ে নিবে। অবশেষে কালাম সেটি করে এবং স্যার কে খুশি করেন। এর পরে তার জীবনে আসে এক নতুন অধ্যায় একদিকে আসে এয়ারফ্রোস ও অন্য দিকে আসে ডিফেন্স তিনি দুটিতেই যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। ডিফেন্স এর ইন্টার্ভিউ দিয়ে এয়ারফ্রোসে আসেন কিন্তু ২৫ জনের মধ্যে তিনি ৯ম স্থান অধিকার করে যেখানে লোক নেওয়ার কথা ৮ জন। ফলে তিনি বাতিল হয়ে পাইলটের স্বপ্ন হারিয়ে ফেলে পরে তিনি খুব দুঃখ কষ্ট নিয়ে একজন স্বামীজির কাছে যান এবং মনের সকল কথা বলেন স্বামীজি তাঁকে বলেন,
ইচ্ছা যদি হয় মন থেকে তাহলে সেটায় আলাদা একটা জোর থাকে। স্বপ্ন দেখে সেটার বাস্তবে রূপ দিতে অনেক কষ্টের যা সবাই পারে না কিন্তু অবিরাম তার পিছনে ছুটে চল্লে অবশ্যই বাস্তব হয়।
এর পরে তিনি দিল্লিতে গিয়ে ইন্ডিয়ান ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতে সিনিয়র সায়েন্টিস হিসাবে কাজ করেন।
১৯৬৯ সালে তিনি স্পেস রিস্রোস অর্গানাইজেশন ইস্রতে বদলি হয়ে আসেন পরে তিনি SLV3 নামে একটি Satellite তৈরির হেড হিসাবে কাজ করেন। কিন্তু ১৯৮৯ সালে SLV3 Satellite মহাকাশে পাঠানোর ৩১৭ সেকেন্ডের মধ্যে ভেজ্ঞে যায়। তখন কালাম কে অনেক কঠিন সময়ের সম্মুখীন হতে হয় যার ফলে তিনি কিছু দিন মানশিক ভাবে ভেজ্ঞে পরেন। এর পরে যখন কালাম প্রেস কনফারেন্সে তার Satellite ভাজ্ঞার কারন বলছিল তখন প্রোফেসর সতিশ ধাওয়ান তার থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে মিডিয়ার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয় এবং এগুলো খুব জটিল মিশন এর কোথায় ভুল ছিল সেটা আমাদের কেই খুজে বের করতে হবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আর যেন এই রকম ভুল না হয়। আমার বিশ্বাস আছে আমরা সফল হতে পারব এবং ১ বছর পরেই আবার মহাকাশে Satellite পাঠাতে সক্ষম। Satellite যখন তৈরি করছিল তখন তাঁকে অনেকেই SLV3 Satellite ভাজ্ঞার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল কিন্তু সে নিজের মতো করে কাজটা করে গিয়েছেন যার জন্য সে সফল হয়েছেন। 18th-july-1980 Satellite মহাকাশে পাঠতে সফল তিনি.
এর পরে তিনি ১৯৯৮ সালে পরমাণু তত্ত্বের কিছু সফল গবেষণা করেন এই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে মন্ত্রীর পদ দিতে চাইলে সে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তিনি নিজের যোগ্যতায় রাষ্ট্রপতি পদ পায়। ২০০৭ সালে তিনি সম্মানের সাথে রাষ্ট্রপতি পদ ত্যাগ করেন এবং ২০১৫ সালে পরলোক গমন করেন।**গল্প থেকে আমরা কী শিখতে পারলাম? যে মানুষটা ছোট বেলা থেকে লেখাপড়ার মাঝে পরিবারের হাল ধরতে সংবাদপত্র বিক্রি করেছেন কারন তার পড়ার পথে দারিদ্র বাঁধা হয়ে দারিয়ে ছিলো হাজারও কষ্ট ভরা রাস্তা পেরিয়ে তিনি আজকে সফল।
একটা মানুষের কতটা ইচ্ছা শক্তি থাকলে জীবনে সফল হওয়া যায় এটাই তার বাস্তব উদাহরণ। জীবনে কিছু করতে হলে অনেক কিছু কে ত্যাগ করতে হয় তাই সকল দুঃখ কষ্টকে একটা শিক্ষা হিসাবে গ্রহণ করতে হবে আমাদের। হোক সেটা অনেক বড় বা ছোট, দুঃখ কিন্তু দুঃখই। ভাই দুই দিনের জীবনে সাবাইকে ক্ষমা করতে শিখুন, সবার শুনাম করতে শিখুন। আপনাকে যেকোনো সময় যে কোন পরিবেশে পরতে হতে পারে তার জন্য হাল না ছেড়ে কাজটা কে ভালবাসুন।
[J] অনুপ্রেরণামূলক গল্প-মোটিভেশনাল গল্প -10: সোহাগ হাওলাদার এর জীবনী
সোহাগ হাওলাদার একজন ডাক্তার হয়তো আপনারা তার কথা শুনেছেন হাজারও সীমাবদ্ধতাকে জয় করে অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন তিনি। পড়ুন তার জীবনের গল্প আর দেখুন জীবনের সাথে কতোটা যুদ্ধ করে উঠে এসেছেন আজকের অবস্থানে।
ঢাকা মেডিকেলে পড়ার সৌভাগ্য হবে আমি কোন দিন স্বপ্নেও ভাবেনি এখন ভাবতে অবিশ্বাস্য লাগে যে আমার কাছে মেডিকেলের ফর্ম কেনার টাকা ছিল না এমন দিনও পার করতে হয়েছে আমাকে। দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে কেটেছে শৈশব বাবার সাথে খেতে কাজ করা আর রাতে মাছ ধরাই ছিল আমার প্রতি দিনের কাজ। আর দুইটা ছেলের মতো কখনো বিকালে খেলাধুলা করা হয়নি যেখানে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য খেটে জেতাম তবুও, মনের ভিতরে একটা জেদ কাজ করতো যে আমাকে পড়ালেখা করতেই হবে বড় একদিন আমাকে হতেই হবে। তাই সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে রাতে হ্যারিকেনের আলোয় যখন পড়তে বসতাম, ক্লান্ত শরীর সায় না দিলেও মনের জোরেই পড়তে বসতাম। অভাব অনটনের শংসারে যেখানে দুবেলা দুমুঠো ভাতই যোগার হয় না সেখানে পড়ালেখাতো বিলাসিতা।
আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখন আমার মা মারা যায় অসুস্থ হয়ে এক কোয়াক ডাক্তার মাকে চিকিৎসা করে, টাকার অভাবে মাকে ভাল চিকিৎসা করাতে পারি নি। মা কি রোগে মারা গিয়েছিল তখন বুঝিনি আমি এখন ডাক্তার হয়ে বুঝতে পারছি মা স্ট্রোক করেছিল। মা মারা গেলেন কিন্তু রেখে গেলেন ২২ দিন বয়সি একটা বোনকে ও ছাড়াও আমরা তখন ৪ ভাই বোন আমিই সবার বড়। যেখানে আমাদের জীবন ধারন করাই কষ্টের সেখানে ওর লালন পালন করা দূষকর। তাই ওকে এক নিঃসন্তান পরিবার নিয়ে গেলেন এবং বলে গেলো কোন দিনই আমরা তাঁকে বোন বলে পরিচয় দিতে পারব না। মা মারা যাওয়ার ৬ মাস পরেই বাবা আবার বিয়ে করলো। আর একটা বোনকে খালা নিয়ে গেলেন কিন্তু ঠিক মতো খেতে দিতেন না রান্না ঘরে থাকতে দিতেন।
আমি ক্লাস ফোরের বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে সবার সিদ্ধান্তে পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে নারায়গঞ্জে ওয়ার্কশপে কাজ করতে যাই যাতে বাবাকে আর্থিক সাহায্য করতে পারি। ওয়ার্কশপে সকাল ৮ তা থেকে রাত ২ তা পর্যন্ত কাজ করতে হতো। আমার সামনে দিয়ে আমার বয়সি ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতো তাদের দেখে আমার চখে পানি চলে আসতো। ৬ মাস পরে আমি বাড়ি বেড়াতে আসি ওয়ার্কশপে যাওয়ার আগের দিন আমার এক বন্ধু আমাকে স্কুলে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়ে স্কুলে নিয়ে যায়। স্কুলের বন্ধুদের দেখে আমার আর তাদের সঙ্গ ছাড়তে ইচ্ছা করলো না তাই আমি ভর্তি হয়ে স্যারদের কাছ থেকে বই নিয়ে বাড়িতে যাই। বাড়ি আসে যখন বললাম আমি আবার স্কুলে যাব তখন মনে হলো পরিবারের সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। আমার সৎ মা আর বাবা আমাকে আবার ওয়ার্কশপে যেতে বলে তারা আমাকে বাসা থাকতে দিলেন না তাই আমি নিরুপায় হয়ে পাশের বাড়ি লজিং থাকতাম। দুইটা বাচ্চাকে কে পড়াতাম আর আমার পড়ালেখার খরচ আমাকেই চালাতে হতো। আমি শুক্রবার জমিতে কাজ করতাম ২০ টাকা পেতাম আর মাছ ধরতাম আমি সারা রাত নৌকা চালাতাম আর একজন টেরা দিয়ে কুপাতো। এই ভাবে যে টাকা পেতাম সেটা দিয়ে পড়ার খরচ চালাতাম। সবার মতকে উপেক্ষা করেই ৬ মাস গ্যাপ দিয়েই ক্লাস ফাইভ ফাইনাল পরীক্ষা দিলাম। বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়ির এক চাকরিজীবীর কাছে টাকা চেয়েছিলাম, তার সেই তাচ্ছিল্য হাসি এখনো আমার চোখে ভাসে। আমাকে বলে যে, সারা দিন মাঠে কাজ করে সে করবে পড়ালেখা! জিদ চেপে যায়, দাঁতে দাঁত রেখে পড়তে থাকি পরে ৫০ টাকা দিয়ে আমার এক সিনিয়রের থেকে পাঞ্জেরি গাইড কিনে নেয়। বেশি রাফ খাতা করতে পারিনি তাই খাতার এমন জায়গা নেই যেখানে লিখিনাই। এতো কষ্ট করার পরে তখন আমি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করি তখন আমি স্যারদের শুনজরে আসি,এই বৃত্তি পাওয়াটাই ছিলো আমার টারনিং পয়েন্ট। এর পর থেকে টিউশনি করে পড়াশুনা চালাই।
অষ্টম শ্রোণিতে সাধারন বৃত্তি পেয়ে পরে এস এস সি তে GPA 4.88 এইচ এস সি GPA 5.00 পেয়ে ঢাকায় আসি। কোচিং করার মতো টাকা ছিল না তাই রুমের ফ্যান বিক্রি করে টাকা দেই। অসহনীয়ও গরমে কিভাবে যে লেখাপড়া করেছি সেটা বলে বুঝাতে পারব না। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই প্রথমে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম কেনার টাকা ছিলো না এক বন্ধুর থেকে টাকা নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আল্লাহ্র রহমতে ১৮২ তম হয়ে চান্স পাই। এখন যেই মানুষ গুলো আমাকে তাচ্ছিল্য করতো তারা সবাই আমাকে গুরুত্ব দেয়। গ্রামের যে কোন সমস্যায় আমাকে ডাকে আমিও সবার গুরুত্ব দিয়ে দেখি।
বার বার একই কথা বলতে হয়, মনের আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে সব অসম্ভব কঠিন বলে এই পৃথিবীতে কিছুই নেই। বাংলাদেশে এমন হাজার হাজার ছেলের জীবন পরিবারের দারিদ্র্যতার জন্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং অন্য মানুষের কটূক্তি কথায়। শুধু মাত্র টাকা পয়সা দিয়েই মানুষের উপকার করা যায় না, পারলে একটু অনুপ্রেরণা দিন, একটু সাহস দিন। এই দেশের মানুষ নিযেত কিছু করবেই না এবং অন্য কেউ করতে দিবে না। আমি বুঝিনা আমার দেশের সমাজব্যবস্থা কেন এইরকম ! কাউকে একটু সাহস, অনুপ্রেরণা, উৎসাহ, মনোবল, দিতে কি আমাদের টাকা লাগে? মনে হয় না। তাহলে কেন আমরা অন্যদের ভালো কাজে বাঁধা প্রদান করে থাকি! আমরা সোহাগ হাওলাদারের জীবন থেকে যেটা শিক্ষা নিতে পারি, আপনি যা চাইবেন নিজের সব শক্তি দিয়ে তার জন্য লড়তে হবে।
আজকের এই মোটিভেশনাল গল্প বা অনুপ্রেরণামূলক গল্প গুলি বা সাফল্যের গল্প গুলো কেমন লাগলো আপনাদের তা কমেন্ট করে জানাবেন………………
Next Post :